ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি জাফর।
Published : 01 Nov 2024, 08:58 PM
কক্সবাজার-৪ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ‘ঘনিষ্ঠ সহচর’ হিসেবে পরিচিত টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান এ কথা জানান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় ঢাকার বাসাবো এলাকার একটি বাসায় র্যাব-১৫ ও ৩ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার জাফর আহমদ (৬৭) টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল এলাকার প্রয়াত সুলতান আহমেদের ছেলে এবং টেকনাফের ইয়াবা ‘সিন্ডিকেটের সম্রাট’ বদির ডান হাত হিসেবে পরিচিত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানী ঢাকার বাসাবো এলাকার একটি বাসায় টেকনাফে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনায় দায়ের মামলার অন্যতম পলাতক আসামি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম অবস্থানের খবর পায় র্যাব। পরে র্যাব-১৫ ও ৩ এর একটি যৌথদল সন্দেহজনক বাসাটিতে অভিযান চালায়। এসময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মত টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাফর।
সরকারের পতন হলে ১৯ অগাস্ট দুই মাসের মাথায় স্বপদ থেকে তাকে অপসারিত করা হয় তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আছে জাফরের বিরুদ্ধে।
গত ১৮ অগাস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি জাফর।
এই মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রহমান বদি ইতোপূর্বে র্যাবের হাতে আটক হলেও তার বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে পরিচিত জাফর এতদিন অধরাই ছিলেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, সরকার পতনের জের ধরে গত ৫ অগাস্ট রাতে টেকনাফে বিএনপি নেতার মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জাফরের নেতৃত্বে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনায় আলাদাভাবে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে; যার প্রায় সবকটিতেই জাফরকে আসামি করা হয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, এছাড়া জাফরের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, দুদকের মামলাসহ এক ডজন মামলা রয়েছে।
এগুলোর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তিনি জামিনে থাকলেও অধিকাংশ মামলাই বিচারাধীন।
গত ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় বিপুল পরিমাণ আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। পরে জামিনে বের হয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
এছাড়া সরকার পতনের জের ধরে দায়ের হওয়া নাশকতা মামলাগুলোতে তিনি এতদিন পলাতক ছিলেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে ১২৭৫ জন মাদক কারবারিকে তালিকাভুক্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সেই প্রতিবেদনে আব্দুর রহমান বদি ও তার ঘনিষ্ঠ সহচর জাফর আলমকে ‘ইয়াবা সিন্ডিকেট’ নিয়ন্ত্রণের মূল ক্রীড়নক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার বিকালে জাফরকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।