“আমাদের দাবি, সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে। দাবি আদায় না হওযা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
Published : 10 Jul 2024, 03:36 PM
কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়ক অবরোধ করছেন তারা। এর আগে সকাল ১০টা থেকে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হতেন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে সোয়া ১২টার দিকে গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় মুষুলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। তখন শিক্ষার্থীদের কেউ মাথার ওপর ছাতা, কেউ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সড়কে অবস্থান নেন। এর আগেই সড়কের দুই পাশে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে দেন তারা।
এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের তৈরি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা মানুষেরা। তবে জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত গাড়িগুলোর চলাচলের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে বক্তব্য, গান কবিতা ও সংগীত পরিবেশন করছেন শিক্ষার্থীরা। ‘সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান, এক হও লড়াই করো; কোটা না মেধা, মেধা মেধা; একাত্তরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; আঠারোর হাতিয়া গর্জে উঠুক আরেকবার’-স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
সোমবার থেকে এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি হলো- সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।
বিক্ষোভ চালাকালীন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হামিদা আব্বাসী বলেন, “বৈষম্য মূলক কোটা প্রথার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। ছোট ভাইদের আন্দোলনকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বলতে চাই সরকারি চাকরিতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নূন্যতম কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে।”
বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাউল্লাহ আল গালিব বলেন, “বিভিন্ন আন্দোলনের ছাত্রসমাজ তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়েনি। আমাদের দাবি, সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে। দাবি আদায় না হওযা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
এদিকে মুষুলধারে বৃষ্টি আর অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে।
সিলেটের সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জ থেকে সকালে সিলেট শহরের সবজি বিক্রির উদ্দেশ্যে আসা সেলিম মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গাড়িতে বসে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত কষ্ট করে হেঁটেই আসতে হলে।” তবে কি জন্য অবরোধ তা তিনি জানেন না।
ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে অটোরিকশায় বসে ছিলেন শর্মিলা বেগম নামের এক নারী। সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যেতে সিলেটের টিলাগড় থেকে বেলা ১১টায় বের হয়েছিলেন। কিন্তু অবরোধের কারণে বেলা আড়াইটায় পর্যন্ত আটকে ছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, “কোন সময় যে গাড়ি ছাড়বো জানি না। খুবই অসুবিধাত আছি। আবার বৃষ্টিও অইতাছে।”