এসপি পরিচয়ে কনস্টেবলের টাকা আত্মসাৎ, ১০ বছরের কারাদণ্ড

দণ্ডপ্রাপ্ত সোহাগ মাহমুদ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন; জামিন পেয়ে পলাতক আছেন।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2022, 05:39 PM
Updated : 2 Oct 2022, 05:39 PM

রাজশাহীতে এসপি পরিচয়ে এক কনস্টেবলের টাকা আত্মসাতের মামলায় এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রোববার রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা জানান।

একই সঙ্গে আসামিকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, যা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত সোহাগ মাহমুদ বাপ্পী ওরফে রনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা। মামলার তদন্তকালে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন; জামিন পেয়ে পলাতক আছেন।

আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে দুটি ধারায় ওই দণ্ড দেওয়া হয়। একটি ধারায় সাজা শেষ হওয়ার পর অন্য ধারার সাজা কার্যকর হবে। আসামির হাজতবাস মূল কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে। পলাতক থাকায় তার গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে সাজা কার্যকর হবে।

আদালত থেকে জানা যায়, সে সময় বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত কনস্টেবল রবিউল ইসলামের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায়। মোবাইল ফোনে বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি রবিউলের কাছ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর করা মামলার এজাহারে বাদী কোনো আসামির নাম উল্লেখ করেননি। পরে পুলিশের তদন্তে সোহাগ মাহমুদ ধরা পড়েন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত তৎকালীন পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রবিউলকে একটি ফোন নম্বর দিয়ে বগুড়া সদর থানার আকবরিয়া হোটেলের সামনে গিয়ে কথা বলতে বলেন। পথে এএসআই নাজমুল হোসেনও তাকে ওই নম্বরে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলেন।

তিনি ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে অন্য প্রান্ত থেকে এসপি পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি শহরের সাতমাথা এলাকার কোনো দোকানে রকেটের (মোবাইল ব্যাংকিং) ব্যক্তিগত হিসাব আছে কি না, খোঁজ নিতে বলেন। সপ্তপদী মার্কেটের একটি দোকানে রকেট হিসাব আছে জানানোর পর অপর প্রাপ্ত থেক ফোনটি দোকানিকে দিতে বলেন। অন্য প্রান্ত থেকে দোকানিকে টাকা পাঠানোর বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়।

দোকানি রবিউলকে বলেন, “পুলিশ সুপার স্যারের আত্মীয় অসুস্থ, তাই দ্রুত টাকা পাঠাতে বলছেন। পরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে স্যারের লোক এখানে আসবেন।”

এরপর ওই দোকানির রকেট হিসাব থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু পরে কেউ টাকা নিয়ে আসেননি; ফোন নম্বরটিও বন্ধ হয়ে যায়।

রায়ের পর পুলিশ সদস্য রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আছেন; মামলার রায়ের কথা তিনি শোনেননি।

পরিদর্শক জয়নাল ও এএসআই নাজমুল ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই প্রতারক তাদের সঙ্গেও পুলিশ সুপার পরিচয় দিয়ে কথা বলেছিলেন। টাকা পাঠানোর কিছুক্ষণ পর পরিদর্শক জয়নাল ঘটনাটি বুঝতে পেরে ফোন দিয়ে টাকা পাঠাতে নিষেধ করেন। কিন্তু ততক্ষণে টাকা নিয়ে প্রতারক ফোন বন্ধ করে দেন।”