দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভবানীপুর থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের দাবি, শিশুদের বাবাই তাদের বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে।
শুক্রবার সকালে ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে শিশুদের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানান দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন।
নিহতরা হলো- সাত বছরের ইমন ও তিন বছরের ইমরান। তাদের বাবা সফিকুল ইসলাম (৩৬) বিরলের পৌর এলাকার শংপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দিনমজুরির পাশাপাশি ফেরি করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করেন।
শিশুদের দাদা রফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলের স্ত্রী উর্মি বেগম পাঁচ মাস আগে সন্তান ও স্বামী ছেড়ে ঢাকায় চলে যায় এবং সেখানে গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। সফিকুল তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
আড়াই মাস আগে উর্মি সফিকুলকে তালাকনামাও পাঠিয়ে দেন। মা চলে যাওয়ার পর থেকে ইমন ও ইমরান দাদা-দাদীর কাছেই থাকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শীতের কাপড় কিনে দেওয়ার কথা বলে দুই সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যান সফিকুল। এরপর তারা আর বাড়ি ফিরেননি। রাতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রফিকুল ইসলাম আরও জানান, “শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সফিকুল মোবাইলে জানায়, ছেলেদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছি। তোমরা দখতে চাইলে ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আস।’ এ সময় সফিকুল নিজেও বিষ খেয়েছে বলে পরিবারকে জানান।”
পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থলে এসে দেখে স্কুলের পরিত্যক্ত কক্ষে দুই শিশুর মরদেহ পড়ে আছে। কিন্তু সেখানে সফিকুলকে পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে তদন্ত চলছে। শিশুদের বাবা সফিকুলকে খোঁজা হচ্ছে।”
সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।