কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বেড়ে একটি স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
Published : 19 Jun 2024, 01:43 PM
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামের প্রধান দুই নদী তিস্তা ও দুধকুমার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রতিনিয়ত বেড়ে বিপৎসীমার খুব কাছে রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে কুড়িগ্রামে একটি স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি।
বুধবার সকাল ৯টায় পাউবোর দেওয়া তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দুধকুমার নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি রয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে দুধকুমার ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার রাজারহাট ও নাগেশ্বরী উপজেলার ১২টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়াতে সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং চিলমারীর কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলার পাঁচগাছি গ্রামের কৃষক জয়নাল শেখ বলেন, “আমার ১৫ শতক জমির সবগুলো পটলের আবাদ ধরলার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে।”
চর কুড়িগ্রামের বাসিন্দা শিমুল মিয়া বলেন, “গতকাল রাইত থাকি নদীর পানি বাড়তেছে। হামার বাড়ির সামনের রাস্তা তলে গেইছে, চলাচলের খুব অসুবিধা হচ্ছে।”
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, “উজানে ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার ভিতরে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।”
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলায় প্রাথমিকভাবে বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, জিআর চাল ২৫১ মেট্রিক টন এবং ২৭৯ বান্ডিল ঢেউ টিন মজুদ আছে। উদ্ধারের জন্য বেশকিছু নৌকা প্রস্তুত করা হয়েছে।