বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার বিষয় গোপন রাখতে নানা কৌশলও অবলম্বন করছিলেন ছেলে, বলেন ওসি।
Published : 23 Jan 2025, 11:58 PM
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অনুশাসন থেকে মুক্তি পেতে ছেলে তার বাবাকে খুন করেন বলে দাবি পুলিশের।
ঘটনার ১০ মাস পর সন্দেহজনক আচার-আচারণের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিলে ছেলে তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন নিহত মো. রুস্তুম আলী হাওলাদারের (৭৫) ছেলে বাদশা হাওলাদার (৪৫)।
রুস্তুম আলী বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠি গ্রামের প্রয়াত আতাহারউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।
মামলার নথির বরাতে ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল রুস্তুম আলী হাওলাদার নিখোঁজ হন। দুইদিন পর বাড়ির পাশের কচুক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়।
গত ২৮ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দেখা যায়, বৃদ্ধ রুস্তুম আলী হাওলাদারকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার ভাই আইউব আলী বাদী হয়ে গত ২১ জানুয়ারি বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
ওসি বলেন, বাদশা হাওলাদারের জীবন-যাপন ও কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। বুধবার পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বাদশা তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
বাদশার জবানবন্দির বরাতে ওসি বলেন, হত্যার শিকার রুস্তুম আলী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। দেশে ফিরে দাওকাঠি গ্রামে দ্বিতল ভবন করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন। একমাত্র ছেলে বাদশাকে প্রতিষ্ঠিত করতে জোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। এজন্য ছেলেকে সব সময় শাসনসহ বকাবকি করতেন। এ নিয়ে বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হন বাদশা। বাবার অনুশাসন থেকে রক্ষা ও স্বাধীন জীবন-যাপনের জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের বাদশা স্বীকার করেছেন, দাবি পুলিশের।
২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে দেখতে পান, তার বাবা বাড়ির পাশের কচুক্ষেতে কাজ করছেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাদশা কচুক্ষেতে গিয়ে একটি গামছা দিয়ে বাবার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যার পর লাশ সেখানে রেখেই পাতা দিয়ে ঢেকে দেন।
ঘটনার পরও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন বাদশা। বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার সব বিষয় গোপন রাখতে নানা কৌশলও অবলম্বন করেছেন তিনি।
ওসি বলেন, ছেলে বাদশা তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সেলিম রেজার কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।