অনুমোদন পেল উচ্চ ফলনশীল ‘ডায়াবেটিক ধান’

ব্রি ধান ১০৫ থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেডের পরিমাণ তুলনামুলক কম; যে কারণে একে বলা হচ্ছে ‘ডায়াবেটিক ধান’।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2023, 08:19 AM
Updated : 3 March 2023, 08:19 AM

বোরো ও রোপা আউশ মৌসুমে চাষ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৫ ও ব্রি ধান ১০৬ এর অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।

বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বীজ বোর্ডের ১০৯তম সভায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত নতুন জাত দুটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

ব্রি জানিয়েছে, বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী ব্রি ধান ১০৫ কম জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) সম্পন্ন, অর্থাৎ এ ধান থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেডের পরিমাণ তুলনামূলক কম। যে কারণে একে ‘ডায়াবেটিক ধান’ বলা হচ্ছে।

গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যা আর পেলে অনুকূল পরিবেশে ৮ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত ফলন বাড়তে পারে।

অন্যদিকে রোপা আউশ মৌসুমের ব্রি ধান ১০৬ অলবণাক্ততা জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে চাষের উপযোগী। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৪ দশমিক ৭৯ টন, যা এই মৌসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান ২৭ এর চেয়ে শতকরা ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি ফলন দেয়। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৪৯ টন ফলনও পাওয়া যেতে পারে।

নতুন এ দুটি ধানের জাতসহ এ পর্যন্ত ১১৩টি ধানের জাত উৎপাদন করেছে ব্রি। বৃহস্পতিবার নতুন জাত অনুমোদনের সভায় কৃষি মন্ত্রণালয় সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ব্রির মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর উপস্থিত ছিলেন।

নতুন ধানের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে ব্রির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক জানান, ব্রি ধান ১০৫ ধানের বৈশিষ্ট্য হল সবুজ পাতা, খাড়া ডিগ পাতা, মাঝারি লম্বা ও চিকন দানা। এ ধানের জিআই মান ৫৫.০। কম জিআই হওয়ার কারণে এটি ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশা করা যায়।

এ জাতের ধান গাছের গড় উচ্চতা ১০১ সেন্টিমিটার। ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। জীবনকাল ১৪৮ দিন। এই জাতের এক হাজারটি দানার ওজন ১৯ দশমিক ৪ গ্রাম। ব্রি ধান ১০৫ এর অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রেটিনের পরমিাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হয়।

অন্যদিকে ব্রি ধান ১০৬ আউশ মৌসুমের অলবণাক্ততা জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের উপযোগী। এ জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। পাতার রং গাঢ় সবুজ। ধান গাছের গোড়া ও ধানের দানার মাথায় বেগুনি রঙ থাকে। গড় উচ্চতা ১২৫ সেন্টিমিটার। গাছ সহজে হেলে পড়ে না। ধানের দানা মাঝারি মোটা এবং সোনালি বর্ণের, গড় জীবনকাল ১১৭ দিন।

এক হাজার দানার ওজন ২৪ দশমিক ৫ গ্রাম। অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। ভাত হয় ঝরঝরে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট তিন বছর এই ধানের ফলনসহ বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা করে। অবশেষে জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়নে ধানের ফলন পরীক্ষা করে সন্তোষজনক হওয়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।