বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি জানান, প্রায় চার বছর পর তারা নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
Published : 18 Feb 2024, 07:32 AM
ভারতীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন বরগুনার পাথরঘাটা থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ছয় জেলে।এই জেলেরা ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে তিন বছরের দণ্ড পেয়ে কারাগারে ছিলেন।
প্রায় চার বছর পর বুধবার ভোরে তারা নিজ বাড়িতে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
২০২০ সালে অনুপ্রবেশের দায়ে এই জেলেদের তিন বছরের সাজা দিয়েছিল ভারতীয় আদালত। যা চলতি বছরের ১৭ আগস্ট শেষ হয়। কিন্তু তারপরও তাদের মুক্তি না মেলায় গত ১১ সেপ্টেম্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
এরপর মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ভারতীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা।
এই জেলেরা হলেন, পাথরঘাটার চরদুয়ানী ইউনিয়নের চরদুয়ানী গ্রামের মৃত আমির হোসেন জোমাদ্দারের ছেলে মো. বেলাল মাঝি, দক্ষিণ জ্ঞানপাড়া গ্রামের সুলতান চৌকিদারের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের আ. রব জোমাদ্দারের ছেলে মো. এমাদুল হক, একই এলাকার মৃত হাফেজ জোমাদ্দারের ছেলে মো. শাহিন, জ্ঞানপাড়া গ্রামের আতাহার আলীর ছেলে আবদুল হক ও পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার চরখালী এলাকার বাহাদুর চাপরাশির ছেলে মো. ইমরান চাপরাশি।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকালে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) ঘাট থেকে তৌহিদুল ইসলামের মালিকানাধীন এফ.বি. মারিয়া নামের ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেন ছয় জেলে।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টা চলার পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি স্রোতে ভাসতে ভাসতে দেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতে চলে যায়। সেখানে একটি চরে নোঙর করা অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ভারতের বনবিভাগ কর্মীরা তাদের আটক করে।
অনুপ্রবেশের অপরাধে ট্রলারটিসহ ছয় জেলেকে মামলা দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বন বিভাগ। পুলিশ আদালতের মাধ্যমে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাড়ইপুর কারগারে পাঠায়। সেখানকার আদালত তাদের তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।
সে সময় ভারতীয় একটি ফোন নম্বর থেকে কল করে ট্রলারটির মালিক তৌহিদুল ইসলামকে জেলেদের আটকের বিষয়টি জানানো হয়। পরে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি তৌহিদুল নিখোঁজ ছয় জেলের নাম উল্লেখ করে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভুঁইয়া জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় জেলেরা আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদেরকে বাড়ির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।
ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, সাজা শেষ হওয়ার দেড় মাস পর মঙ্গলবার বিকালে কারাগার থেকে মুক্তি পান জেলেরা। তাদের বাড়ি ফিরিয়ে আনতে ট্রলার মালিকের পক্ষ থেকে বেনাপোল পোর্ট বন্দরে গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়।
সেই গাড়িতে বুধবার ভোরে জেলেরা বাড়ি ফিরেছেন। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফেরায় স্বস্তি ফিরে এসেছে জেলে পরিবারগুলোয়।
[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ০৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]