হামলাকারীরা সিপিবিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে গালাগাল করতে থাকেন।
Published : 13 Nov 2024, 11:18 PM
পঞ্চগড়ে তেতুঁলিয়া উপজেলায় কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির পথসভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে।
এ সময় সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের হাত থেকে মাইক্রোফোন ও ব্যানার কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার তেঁতুলতলায় এ ঘটনাটি ঘটে বলে জানান তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি মো. এনায়েত কবীর।
পথসভা পণ্ড করে দেওয়া যুবক হযরত আলী নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়েছেন বলে জানান সিপিবির উপজেলা কমিটির নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে পূর্ব নির্ধারিত ‘শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতন্ত্র জাগরণ যাত্রার’ কর্মসূচিতে অংশ নেয় দলটির নেতাকর্মীরা। পথসভার শেষ দিকে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক নেতাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করেন।
এক পর্যায়ে তারা সিপিবিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে গালাগাল করতে থাকেন। পরে তারা ব্যানার ও মাইক্রোফোন কেড়ে নিলে পথ সভাটি পণ্ড হয়ে যায়।
তাৎক্ষণিক সিপিবির পক্ষ থেকে ঘটনাটি থানা-পুলিশকে জানিয়ে নেতাকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান। কিছু্ক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বক্তব্যের এক পর্যায়ে কয়েকজন যুবক এসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন। পরে আমার হাত থেকে মাইক্রোফোন ও নেতাকর্মীদের হাত থেকে ব্যানার ও লাল পতাকা কেড়ে নেন তারা।
“হামলাকারীরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বলে পরিচয় দেন। নেতৃত্ব দেওয়া একজনের নাম হযরত আলী বলে জানতে পারি। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেখানকার আহ্বায়ক বলে দাবি করেন।”
পরে বিষয়টি তেঁতুলিয়া থানা-পুলিশ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে জানানো হয় বলে জানান রুহিন হোসেন প্রিন্স।
হযরত আলীর সঙ্গে কথা হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। সিপিবির সমাবেশে বাধার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “তেঁতুলতলায় একটি সভা হচ্ছিল, সেখানে ‘ফ্যাসিস্টদের দোসররা’ উপস্থিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। আমি সেখানে বিষয়টি সমাধান করতে গিয়েছি মাত্র। অথচ এখন আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হযরত আলী তেঁতুলিয়ায় নেতৃত্ব দেওয়ার দাবি করলেও বর্তমানে সেখানে কোনো কমিটি নেই বলে জানান তিনি।
ওসি এনায়েত কবীর বলেন, “সিপিবির সভার একেবারে শেষ দিকে কিছু ছেলে বাধা দেয়। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ছোটখাটো ধাক্কাধাক্কি ছাড়া কিছু হয়নি। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। শুনেছি একটু ধাক্কা ধাক্কি হয়েছে।
“ঘটনার পর সবাই চলে গেছে। কে বাধা দিয়েছে তাদের পরিচয় কেউ বলতে পারছেন না। তবে এ নিয়ে সিপিবির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।”
পথসভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে ফেইসবুকে নিজ ওয়ালে বাধা দেয়ার ছবিসহ পোস্ট করেছেন সিপিবি নেতা প্রিন্স।
পোস্টে লিখেছেন, “তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় এর তেঁতুলতলায় পথসভায় বক্তব্য শেষ করতে পারলাম না। পথসভা করতে দেওয়া হোল না। ওরা কারা? প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই। সারাদিনের অন্যান্য কর্মসূচি চলবে। ধৈর্যেরও একটা সীমা আছে!!”