নেছারাবাদে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্থাপিত বীর নিবাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের রহমানের নামে খোদাই করা ফলক ভাঙা হয়েছে।
Published : 07 Feb 2025, 12:34 PM
পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। আগুন দেওয়া হয়েছে সাবেক মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিমের বাসভবনসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতেও।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এসব কাজে অংশগ্রহণ করে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা । তবে সে সময় বা পরে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা উপজেলা সদরে সমবেত হয়ে মিছিল নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের সাবেক জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায় ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শ.ম রেজাউল করিমের উপজেলা সদরের বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়া হয়।
নাজিরপুরে আরও ভাঙচুর করা হয় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ খান, মন্ত্রী রেজাউল করিমের ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূরে আলম শাহীন, নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাস ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে। এসব বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়।
এছাড়া মঠবাড়িয়ার পৌর এলাকায় ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয় ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ (দক্ষিণ) এর সাবেক সভাপতি ও মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বায়জীদ আহমেদ খানের বাড়িতেও।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এস এম বায়জীদ হোসেনের পিরোজপুর পৌর শহরের বাইপাস সড়কের বাড়িতে প্রথমে লুটপাট ও ভাঙচুর করে। পরে আগুন দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।
এসব বিষয়ে জানতে নাজিরপুর থানার ওসি মো. ফরিদ আল ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নেছারাবাদে বীর নিবাসে বঙ্গবন্ধুর নামফলক ভাংচুর
এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী পরিচয়ে পিরোজপুরের নেছারাবাদে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া বীর নিবাসে স্থাপন করা শেখ মুজিবুরের রহমানের নামে খোদাই করা ফলক ভাঙা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জিরবাড়ী গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর জব্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
শেখ মুজিবুরের রহমানের নামে খোদাই করা ফলক ভাঙায় জড়িত মো. সুলতান হোসেনের দাবি তিনি ঢাকায় ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
একি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হালিমের ছেলে সুলতান বলেন, “আমাদের কাজ হল যেখানেই আওয়ামী লীগের ও শেখ মুজিবের চিহ্ন আছে তা নিশ্চিহ্ন করা। তারই অংশ হিসেবে বলদিয়া ইউনিয়নের বীর নিবাসে বসানো শেখ মুজিবুরের রহমানের নামে খোদাই করা পাথর টাইলস ভাঙা হয়েছে।”
শুক্রবার থেকে বীর নিবাসে লাগানো শেখ মুজিবের সব চিহ্ন ভাঙা হবে বলেও তিনি জানান।
এ সময় তিনি দাবি করে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র ঘোষিত বুলডোজার অভিযানের নির্দেশ রয়েছে। গ্রামে বুলডোজার আনা সম্ভব নয় তাই তারা হাতুড়ি শাবল দিয়ে অভিযান শুরু করেছেন।”
এ ব্যাপারে বীরনিবাসের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।