“ছাত্রদলের দুই পক্ষের মাঝে যে কর্মকাণ্ড ঘটেছে, এটি কখনই কাম্য নয়”, বলেন প্রক্টর।
Published : 17 Jan 2025, 12:49 AM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদবঞ্চিতদের বিরোধের মুখে ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সভা পণ্ড হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে নতুন কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করা হলেও, তা শুরু হয় এক ঘণ্টা পর।
তবে সভার শুরুতে বঞ্চিতরা পদ না পাওয়ার বিষয়ে নেতাদের কাছে জানতে চান। এরপর হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দুই অংশে ভাগ হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
‘ছাত্রলীগের কমিটি, মানি না মানব না,’ ‘শিবিরের কমিটি, মানি না মানব না’ দুই পক্ষ থেকে এমন স্লোগান আসতে থাকে।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ সেমিনার কক্ষের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে সেমিনার কক্ষের দরজা, জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। যদিও কোনও পক্ষই এই কাজ করেনি বলে দাবি করেছে।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ আনার ব্যবস্থা করেন।
তবে প্রক্টরের অনুরোধে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সভা স্থগিত করে পরবর্তীতে সভা করার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটির পরিচয় পর্বের জন্য সভার আহ্বান করা হয়েছিল। শুধুমাত্র আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা নেতাকর্মীদের আমরা ডেকেছিলাম। কিন্তু পদ পায়নি এরকম কিছু লোক ‘গুপ্ত সংগঠনের’ ইন্ধনে সভাটি বানচাল করার চেষ্টা করেন।
“যারা পদ পায়নি তাদের দুঃখ থাকতে পারে, সেটা আমরা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এখানে তৃতীয় কোনও পক্ষ থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা।”
এদিকে সেমিনার কক্ষ থেকে বের হয়ে আসা নেতাদের মধ্যে ছিলেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম রেজা।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে অনেক ত্যাগী কর্মীকে বাদ দিয়ে ‘ছাত্রলীগ’ ও বিতর্কিত লোকজন এমনকি ৫ তারিখের পর রাজনীতিতে এসেছে এমন শতাধিক লোক পদ পেয়েছে। এত বড় কমিটি করার কারণ হল ত্যাগীদের বাদ দিয়ে আগামী কমিটিও যেন তারা কুক্ষিগত করতে পারেন।
“তাই ‘ছাত্রলীগের’ সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে কমিটি করে ভোটার বৃদ্ধি করে নতুন কমিটিও তাদের অনুকূলে নেওয়ার পাঁয়তারা করেছেন। সেখানে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা উল্টো আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। পরবর্তীতে দাবি জানিয়ে এসেছি, আমাদেরকে বঞ্চিত করা হল কেন?”
প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “ছাত্রদলের দুই পক্ষের মাঝে যে কর্মকাণ্ড ঘটেছে, এটি কখনই কাম্য নয়। আমরা চাই সকলেই সহাবস্থানে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।
“সব ছাত্র সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।”
এর আগে ৮ জানুয়ারি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির অফিস সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রসায়ন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক এবং দর্শন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আহমেদ অনীককে সদস্যসচিব করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: