হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে, বলেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি।
Published : 12 Jan 2025, 12:42 AM
ফরিদপুরে কাঠমিস্ত্রি ওবায়দুর রহমানের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে লাশ নিয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বলেন, মাদকসহ এলাকার নানা অসঙ্গতির প্রতিবাদ করাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
৩২ বছর বয়সি ওবায়দুর রহমান সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে। তিনি পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনে একটি ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলে পেট্রোল নিতে যান তিনি। তখন অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা তাকে সেখান থেকে তুলে নেয়।
ধারাল অস্ত্র দিয়ে তার চোখ খুঁচিয়ে জখম করে, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান ওবায়দুর।
স্বজনদের অভিযোগ, খায়রুজ্জামান ওরফে খাজার মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী সুইটি বেগম বলেন, “আমার স্বামী একজন কাঠমিস্ত্রি, একজন ভালো মানুষ ছিলেন। আমার স্বামী অন্যায়ের প্রতিবাদ করত, এটাই তার অপরাধ। এ কারণে তাকে জীবন দিতে হল। আমার বিয়ে হয়েছে দুই বছর হল। ৬ মাস বয়সি একটি সন্তান আছে। ও বাবা ডাকার আগেই তার বাবা চলে গেল। আমাকে আর ছেলেকে এতিম করে চলে গেল।”
তার অভিযোগ, “স্বামীকে এর আগেও একাধিকবার ধাওয়া করে খাজা ও তার লোকজন। কিন্তু এবার তার জীবনটাই নিয়ে নিল।”
স্বামী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের পর মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান তিনি।
নিহতের বড় ভাই রাজিব খান বলেন, “খাজার অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হল। দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করা না হলে আরো মায়ের বুক খালি হবে।”
এদিকে, হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ওবায়দুর রহমানের লাশ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুর বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।
পরে বিকালে লাশ বাড়িতে নেওয়া হলে হাজারো মানুষ ভিড় করে। সন্ধ্যায় ঝাউখোলা গ্রামে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাদার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, “ওবায়দুরের দাফনের কারণে এখনো তার পরিবার মামলা দায়ের করেনি। রাতের মধ্যেই মামলা করবে। হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তারা ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে।”