কিশোরগঞ্জে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আত্মীয়দের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার সময় জোসনার ওপর ধারালো ছোরা নিয়ে হামলা চালান চাঁন মিয়া।

কিশোরগঞ্জে যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ১ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) এমএ আফজল।

দণ্ডপ্রাপ্ত চাঁন মিয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর গ্রামের মৃত আমির আলীর ছেলে।

এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর আসামি মোছা মিয়াকে খালাস প্রদান করে আদালত।

মামলার নথির বরাতে পিপি আফজল জানান, চাঁন মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার মৃত আব্দুর রশীদের কন্যা জোসনা বেগমের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ৮-৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে চাঁন মিয়া প্রায়ই যৌতুক দাবি করে স্ত্রী জোসনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

এক পর্যায়ে জোসনার মালিকানাধীন জমি বিক্রয় করে তাকে টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেন চাঁন মিয়া।কিন্তু জোসনা তাতে রাজী না হওয়ায় চাঁন মিয়ার নির্যাতন চরমে পৌঁছায়।

পরে ২০১৮ সালের ২১ মে জোসনা তার বড় বোন আনোয়ারা বেগম ও এক আত্নীয়কে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথে নাকভাঙ্গা নামক স্থানে চাঁন মিয়া ধারালো ছোরা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালান।

এ সময় চাঁন মিয়ার উপুর্যপুরী ছুরিকাঘাতে জোসনা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান।গুরুতর আহত হন আনোয়ারা বেগম।

আনোয়ারাকে প্রথমে জেলা সদরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আলাল মিয়া বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর এসআই মিজানুর রহমান মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার রায়ে চান মিয়াকে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের সাজা প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন পিপি এমএ আফজল।

এ মামলায় আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট এম আবদুর রউফ।