শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে তেলিরচালা এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
Published : 26 Oct 2023, 03:50 PM
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, শফিপুর ও মৌচাক এলাকায় ফের মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন পোশাক শ্রমিকরা।
গত কয়েকদিন ধরেই শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর থেকেই মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেন শ্রমিকরা।
অবরোধে বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে দাবি বাস মালিক সমিতির।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার মো. হারুন জানান, গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চন্দ্রার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার হোসাফ মিটার কারখানার সামনে একটি জিপ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে শ্রমিকরা।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী, মৌচাক ও শফিপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করছেন।
“আমরা গিয়ে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার পরপরই তারা মহাসড়কের অন্য কোনো অংশে অবরোধ করছে। এতে মহাসড়কে যান চলাচলের বিঘ্ন হচ্ছে।”
কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিরচালা এলাকায় অবস্থিত লগোজ এ্যাপারেলস লিমিটেড, এটিএস এ্যাপারেলস লিমিটেড, হাইড্রোঅক্সাইড লিমিটেড এবং কোনাবাড়ি এলাকার এলজেড লিমিটেড, ওরিয়েন্ট এলিউর লিনজেরী লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা সকালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
এছাড়া মৌচাক এলাকার গ্লোবাস, কোকোলাসহ বেশ কয়েকটি কারখানা শ্রমিকরাও একই দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের কয়েকজন জানান, বর্তমানে তাদের বেতন সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই বেতনে তাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতনের টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাদের অমানবিক জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তাই বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি করেন তারা।
গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) নাজমুস সাকিব খান বলেন, “শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন, জান মালের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত আছে এবং আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।”
শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে তেলিরচালা এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে গাজীপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. সুলতান উদ্দিন সরকার জানান, পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে তাদের ৫০-৬০টিরও বেশি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেকেই মোবাইল ফোনে ভাংচুরের তথ্য দিচ্ছেন। তবে ভাঙচুর করা বেশিরভাগ বাসই যানজটে আটকে আছে, এগুলো স্ট্যান্ডে আসলে প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে।
আরও পড়ুন