‘বন্দিরা ভাল আছেন, মুক্তিপণের জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে’

“মুক্তিপণের অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে গণমাধ্যমে যা প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। এটি ধারণা থেকে প্রচার করা হচ্ছে।”

নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2024, 02:56 PM
Updated : 14 March 2024, 02:56 PM

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ জন নাবিকের মধ্যে রয়েছেন নওগাঁর এ এস এম সাইদুজ্জামান। তিনি জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী। সবশেষ বুধবার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

তিন বছর আগে মান্না তাহরীন শতধার সঙ্গে সাইদুজ্জামানের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছর বয়সি কন্যা সন্তান রয়েছে। ছয় মাস আগে কর্মস্থলে গিয়েছেন তিনি।

সাইদুজ্জামানের সঙ্গে বুধবার বিকাল সোয়া ৪টায় শেষ কথা হয়েছে বলে জানান তার স্ত্রী মান্না তাহরীন শতধা।

তিনি বলেন, “তারা বন্দি আছেন। তবে ভালো আছেন সবাই। সেহেরি খেয়েছেন। মুক্তিপণ না পেলে একে একে সবাইকে মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে দস্যুরা। তাই আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

“তবে মুক্তিপণের অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে গণমাধ্যমে যা প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। এটি ধারণা থেকে প্রচার করা হচ্ছে। জলদস্যুরা জাহাজ নিয়ে বৃহস্পতিবার সোমালিয়ায় পৌঁছানোর পর অর্থের পরিমাণ জানাবে বলে সাইদুজ্জামান আমাকে জানিয়েছে।”

স্বামীর মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানান শতধা।

সাইদুজ্জামান নওগাঁ শহরের শাহী মসজিদ মহল্লার সাবেক কলেজ শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুমের দ্বিতীয় সন্তান। তিনি নওগাঁ কে ডি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে ১৯৯৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে।

সেখান থেকে পাস করে ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি জাহাজে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি শুরু করেন।

জাহাজ ছিনতাইয়ের পর থেকে সাইদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন।

সাইদুজ্জামানের বাবা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “মঙ্গলবার রাতে ছেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তখন সে বলেছে, সোমালিয়ার জলদস্যুরা তাদের এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করেছে। তারা মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। তবে কোনো নির্যাতন করেনি দস্যুরা। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জাহাজের দায়িত্বরত সবাইকে একটি ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছে তারা।”

সাইদুজ্জামানের মা কোহিনূর বেগম বলেন, “খবর পাওয়ার পর থেকেই পরিবারের সবার চরম উৎকণ্ঠায় সময় কাটছে। নির্ঘুম রাত কেটেছে। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত সরকার ও এমভি আব্দুল্লাহ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।”