এ পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা থেকে যাওয়া সমন্বয়করা রাতেই হাতে লিখে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
Published : 17 Sep 2024, 12:54 AM
সাতক্ষীরায় দুই পক্ষের হাতাহাতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা পণ্ড হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনে সাতক্ষীরা জেলার অন্যতম সমন্বয়ক নাজমুল হোসেন রনি বলেন, শিল্পকলা একাডেমিতে সোমবার বিকালে ওয়াহিদুজ্জামান, আকরাম হোসেন রাজসহ কেন্দ্রীয় সমম্বয়কদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সভা চলছিল। মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আকরাম হোসেন রাজ।
রনি বলেন, এ সময় জনি ও সানি নামে দুইজন ছাত্রকে অডিটরিয়ামে বসা নিয়ে বচসা করতে দেখা যায়।
কিছুক্ষণ পর ছাত্রদের নিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন সানি। এসব হট্টগোলের মধ্যে বক্তব্য শেষ করেন রাজ।
আরেক সমন্বয়ক ইমরান হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারীরা স্বেচ্ছাসেবার কাজ করছেন, এমন অভিযোগে ছাত্রদের একটি বড় অংশের কর্মীরা ভুয়া-ভুয়া স্লোগান দেন। এ থেকে সভায় গণ্ডগোলের শুরু।
ইমরানের অভিযোগ, ছাত্রদলের জনি ও সানিসহ কতিপয় নেতাকর্মী অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
তবে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শেখ শরিফুজ্জামান সজীবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জনি ও সানি নামে ছাত্রদলে তাদের কোনো নেতাকর্মী নেই। তাদের ছাত্রদলের বলে পরিচয় দেওয়াটা ষড়যন্ত্রমূলক।
ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী আজকের সভায় ছিলেন না বলে দাবি তার।
তবে হাবিব নামে আরেক ছাত্র আন্দোলনকারীর দাবি, সাতক্ষীরার কয়েকজন সমন্বয়ককে বাদ দিয়ে ডিসির সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা হয়েছে। এরই জের ধরে শিল্পকলা একাডেমিতে হৈ-হট্টগোল হয়।
ছাত্রদের এক পক্ষ মঞ্চে উঠে মাইক হাতে বলতে শুরু করেন, সাতক্ষীরায় আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে যারা সামনে থেকে আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তাই অনুষ্ঠান হতে দেওয়া হবে না।
এরপর থেকে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো অডিটরিয়াম। একে অপরের সঙ্গে হট্টগোলে জড়িয়ে পড়লে সভা পণ্ড হয়ে যায়। পরে অডিটরিয়ামের সামনে মারপিটে জড়ান ছাত্রদের দুই পক্ষ।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বড় কোনো সংঘাত সৃষ্টি করতে দেওয়া হয়নি।”
এদিকে, এ পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা থেকে আসা সমন্বয়করা রাতেই হাতে লিখে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা স্পষ্ট করছেন যে, সাতক্ষীরাসহ দেশের কোনো জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র থেকে স্বীকৃত কোনো সমন্বয়ক কমিটি নেই।
যে বা যারা আইন হাতে তুলে নেবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় বিবৃতিতে।
এতে আরও বলা হয়, সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার মতবিনিময় সভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে সাতক্ষীরায় সোমবার ছাত্র-জনতার মতবিনিময় সভা স্থগিত করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে আয়োজন করা হবে।
এছাড়া সারাদিনে সমন্বয়করা স্থানীয় সংগঠক ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, শহীদ আসিফের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও তাদের মতবিনিময় হয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা সমন্বয়কদের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন মো. অহিদুজ্জামান।
ঢাকার সমন্বয়ক দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. ওয়াহিদ উজ্জামান, আকরাম হোসাইন রাজ, আশরেফা খাতুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু বকর খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারহানা ফারিনা, ঢাকা কলেজের মুইনুল ইসলাম।