সত্তরে বিয়ের পিঁড়িতে বাগেরহাটের অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক

দশ লাখ এক টাকা দেনমোহরে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2023, 09:37 AM
Updated : 24 March 2023, 09:37 AM

পাঁচ ভাইবোনকে মানুষ করতে গিয়ে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াবেন না বলে পণ করেছিলেন সংসারের বড় ছেলে হাওলাদার শওকাত আলী। কিন্তু অবসরের পর একাকিত্ব ঘিরে ধরায় সত্তর বছর বয়সে সেই পণ ভেঙে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন এই কলেজ শিক্ষক। 

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার জিগিরমোল্লা গ্রামের প্রয়াত নওশের আলীর ছেলে শওকাত শনিবার বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন পাশের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের শাহিদা আক্তার নাজুর সঙ্গে। 

একইসঙ্গে ৩৫ বছরের নাজুর আগের ঘরে থাকা কন্যা সন্তানেরও লেখাপড়াসহ সব দায়িত্বও নিয়েছেন রামপাল সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক এই অধ্যাপক। 

এদিকে জানাজানি হওয়ার পর তাদের বিয়ের ছবি স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগ্য মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করতে শুরু করেন। ভাইরাল হওয়া সেসব ছবিতে কমেন্ট করে তাদের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। 

বরের ছোট ভাই আব্দুল হালিম খোকন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, পরিবারের বড় ছেলে শওকাত আলী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষকতা পেশা বেছে নেন। রামপাল সরকারি ডিগ্রি কলেজে চাকরি শুরুর পর থেকেই সংসারের দায়িত্বভার পড়ে তার উপর। 

“আমাদের পাঁচ ভাই-বোনকে মানুষ করতে তিনি তার ব্যক্তিজীবনের সুখস্বাচ্ছন্দ  একেবারেই ভুলে যান। তিনি বৈবাহিক জীবনে জড়াবেন না বলে পণ করে বসেন। 

“কয়েক বছর হল তিনি শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসরে যান। এরপর তিনি একাকিত্বে পড়ে যান। অন্য ভাই-বোনেরা জীবন-জীবিকার তাগিদের ব্যস্ত থাকায় তাকে দেখাশুনা করার মানুষের অভাব দেখা দেয়। 

আব্দুল হালিম খোকন আরও বলেন, “সম্প্রতি আমরা তাকে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করার এক পর্যায়ে তিনি রাজি হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কনের সন্ধান পেয়ে দশ লাখ এক টাকা দেনমোহরে দুই পরিবারের সম্মতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। 

“আমাদের নতুন ভাবি বিধবা ছিলেন। ভাবির আগের ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ওই মেয়েটির লেখাপড়াসহ সব দায়িত্বও বড় ভাই পালন করবেন।” 

বড়ভাইয়ের বিয়েতে তাদের পরিবারের সবার খুশির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “বিয়ের পর বড় ভাই দারুণ সময় পার করছেন। নতুন জীবনে প্রবেশ করে তিনি ভাবীকে নিয়ে নানা ভাবনা ভাবছেন। ভাই তার ফেইসবুক প্রোফাইলেও তাদের বিয়ের ছবি পোস্ট করেছেন।” 

তবে বিয়ের অনুভূতি কি তা জানতে এই নবদম্পতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।