এদিকে টুঙ্গিপাড়ায় হাজারো জনতা রাজপথে নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
Published : 08 Aug 2024, 11:07 PM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গোপালগঞ্জে দুই ঘণ্টা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো জনতা।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
রাতইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন গ্রামের বঙ্গবন্ধু অনুসারী হাজার-হাজার মানুষ মহাসড়কে অবস্থান নেন। পরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন জনতা।
দুই ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধের কারণে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীরা স্বেচ্ছায় সড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অবরোধকারীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীতে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মকিমুল ইসলাম মকিম বলেন, “অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া একটি মহল শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন করিয়ে ষড়যন্ত্র করে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে।
“আমরা এই ঘটনার বিচার চাই। এজন্য আমরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছি। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”
টুঙ্গিপাড়ায় হাজারো জনতার মিছিল
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবিতে জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় হাজারো জনতা রাজপথে নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ দলে দলে এসে সমবেত হন টুঙ্গিপাড়া আধুনিক পৌর সুপার মার্কেটের সমানে। সেখান থেকে বেলা ১১টায় হাজার হাজার জনতা মিছিল বের করেন।
মিছিলটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে গিয়ে শেষ হয়। পরে তারা বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর বঙ্গবন্ধু ও পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তারা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শপথ বাক্য পাঠ করান টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বিশ্বাস, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ বিশ্বাস, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম সরদার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক বিশ্বাস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবুল হোসেন খোকন উপস্থিত ছিলেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা-নির্যাতন, বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি-৩২ নাম্বর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা, হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে টুঙ্গিপাড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। এতে অন্তত ২০ হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা অংশ নেন।”
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশে আমাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনিই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের একমাত্র নিরাপদ ঠিকানা। তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।
“তাই দেশ এখন অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা রাজপথে নেমিছে। যতদিন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারব, ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।”