জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, “আমি ঝর্ণাকে বিয়ে করেছি। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আইন মেনে তালাক দিয়েছি।”
Published : 15 Sep 2024, 11:53 PM
গাজীপুরে সাবেক এসপি-ওসিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক কলেজছাত্রী।
রোববার গাজীপুর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন ঝর্ণা আক্তার ওরফে বর্ষা (১৯) নামে কলেজছাত্রী। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা।
বাদীর আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান জানান, আদালত জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন-পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মো. মিজানুর রহমান, সাবেক এসপি কাজী সফিকুল আলম, সাবেক এএসপি ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম, ডিসির ওসি দেলাওয়ার হোসেন ও এসপি কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার মো. আব্দুল করিম।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ওসি মিজানুর রহমান ওই কলেজছাত্রীকে গাজীপুরের একটি রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেন। গত ১৭ জানুয়ারি রাতে কলেজছাত্রীর ফোন পেয়ে ওই রিসোর্ট থেকে তাকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।
অভিযোগে বলা হয়, পরে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী শফিকুল আলম ও ডিবি পুলিশের ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ১৮ জানুয়ার ঝর্ণাকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান।
বিয়ের পর মিজান একদিনের জন্যও ঝর্ণার সঙ্গে সংসার করেননি এবং কোনো খোঁজ-খবরও নেননি। গত এপ্রিলে ওই কলেজছাত্রীকে একতরফা তালাক দেন ওসি মিজান।
রোববার দুপুরে কলেজছাত্রী ঝর্ণা আক্তার তার মাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, ১৭ জানুয়ারি রিসোর্ট থেকে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করে তাকে গাজীপুরের এসপির কাছে নিয়ে যান। তার কাছে সব জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তিনি ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিচার না করে উল্টো বিয়ে দিয়ে মিজানকে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম এএসপি ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ডিবির ওসিকে ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা প্রতিবেদন দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ অধিনস্ত কর্মকর্তারা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য তাদেরও বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, “আমি ঝর্ণাকে বিয়ে করেছি। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আইন মেনে তালাক দিয়েছি।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী সফিকুল আলমের মোবাইলে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।