সমাবেশের পথে গৌরনদীতে ইশরাকের গাড়িবহরে হামলা

হামলাকারীরা বহরের আটটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2022, 06:40 AM
Updated : 5 Nov 2022, 06:40 AM

বরিশালে গণসমাবেশে যাওয়ার পথে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার সকাল ৬টার দিকে গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা বাজারে এ হামলা হয় বলে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-মানবধিকার বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা তুজ জোহরা মিতু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

মিতু বলেন, “ইশরাকের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা বহরের আটটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।”

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দায়ি করছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ এনেছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইশরাক বলেন. “আমরা বরিশালে সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলাম। পথে গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা বাজার এলাকায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অর্তকিতে আমার গাড়িবহরে হামলা করে। এতে আমাদের ১১-১২ জন নেতাকর্মী আহত হন।”

আমরা যাতে সমাবেশে যেতে না পারি সেজন্যই এ হামলা হয়েছে মন্তব্য করে বিএপির এ নেতা বলেন, “কিন্তু কোনো কিছুই আমাদের আটকে রাখতে পারেনি। সব বাধা অতিক্রম করে আমরা সমাবেশে পৌঁছে গেছি।”

ইশরাকের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন মাহিলার বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও মাহিলার ডিগ্রি কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শহীদ সরদার।

তিনি জানান, সকাল ৬টার দিকে তারা ১০/১২ জন মাহিলারা বাজারের সামনে রাস্তায় অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে ইশরাকের ৭০/৭৫টি গাড়ির বহর এসে বাজারের সামনের মহাসড়কে থামে। তখন গাড়ি থেকে ‘ইশরাকের ক্যাডাররা’ নেমে বাজারের মর্ডান ক্লাবে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। তারা ক্লাবের ভেতরে টিভি, চেয়ার টেবিল ভেঙে ফেলে। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছবি ছিঁড়েও ফেলে।

শহীদের অভিযোগ, হামলাকারীরা সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। তার মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে। হামলাকারীরা মাহিলারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিলাস কবিরাজকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সঙ্গীত সিকদারসহ আরও দুইজন আহত হয়েছে।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, “ইশরাকের নেতৃত্বে তার দলের লোকেরা আমাদের দলীয় কার্যালয়, দোকান ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।

তাদের হামলায় আমাদের নেতা-কর্মীরা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। কই তাদের তো কেউ হাসপাতালে যায় নাই। তাহলে আমরা হামলা করলাম কিভাবে?”

ইশরাকের অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সান্টু ভুইয়া বলেন, “আমরা তার গাড়িবহরে হামলা করি নাই। আমাদের নেতারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার শিক্ষা দেয় নাই।”

শনিবার দুপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ এই উদ্যানে। ইতোমধ্যে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বিভাগের ছয় জেলা থেকে বিপুল নেতা-কর্মী জমা হয়েছেন সমাবেশ স্থলে।

সমাবেশের আগের রাতেই বঙ্গবন্ধু উদ্যান পূর্ণ হয়ে গেছে। বৃহস্পিতবার থেকে রাতযাপন শুরু হয়। শুক্রবারও নেতা-কর্মীরা সমাবেশের মাঠে অবস্থান করছেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) বিলকিস আক্তার শিরীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ইশরাক সমাবেশস্থলে পৌঁছে গেছেন।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাহিলারা বাজার এলাকায় একটি ক্লাব আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সেই কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আর হামলার বিষয়ে গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলালউদ্দিন বলেন, “মাহিলারায় এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আমরা পরে জানাবো।”