লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার ভুক্তভোগী নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি পা ধইরা কইছি আমাগো মাইরেন না। তখন আমারে পা দিয়া লাথি মেরে ফেলাই দিছে।”
Published : 21 Nov 2023, 07:00 PM
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ষাটোর্ধ্ব এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনায় ওই নারীসহ মোট তিনজন আহত হয়েছেন।
তারা হলেন-ওই ইউনিয়নের আব্দুস কুদ্দুসের স্ত্রী রেজিয়া বেগম, তার ৪০ বছর বয়সী মেয়ে সুখি বেগম ও মেয়েজামাই ৪২ বছরের নবিবর রহমান।
বর্তমানে তারা হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বলে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আনারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
আহতরা ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ৪০ বছর বয়সী তাছাব্বির হোসেন খন্দকার অনিকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় রেজিয়া বেগম যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। দুই হাতেই ব্যান্ডেজ। তার পাশের বেডেই শুয়ে আছেন সুখি বেগম।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রেজিয়া বলেন, “আমি বয়স্ক মানুষ। ধান যেমন কইরা বাইরায় (মাড়াই করে) তেমন কইরা অনিক মেম্বার আমারে ও আমার মেয়েকে মারছে। আমি তার পা ধইরা কইছি আমাগো মাইরেন না। তখন সে আমারে পা দিয়া লাথি মেরে ফেলাই দিছে।”
রেজিয়ার মেয়েজামাই নবিবর রহমান বলেন, “আমার বৃদ্ধ শাশুড়ি আমার বাড়িতে বেড়াইতে আসছে। আমার বাড়ি ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। জমি নিয়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য অনিকের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। সেই জেরে রোববার সন্ধ্যায় অনিক ও তার লোকজন একই ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকার নুর নবী, নুর মোহাম্মদ ও নিলু আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। তখন আমার স্ত্রী ও শাশুড়ি তাদের বাধা দিলে তারা তাদের মারধর শুরু করে।
“ওই সময় আমি বাড়ির পেছনে কাজ করছিলাম। চিৎকার শুনে ছুটে গেলে আমাকেও মারধর শুরু করে। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। পরে সন্ধ্যায় হাতীবান্ধা ফিলিং স্টেশনের সামনে গেলে অনিক ও তার লোকজন আমার ওপর আবারও অতর্কিত হামলা চালায়।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড সদস্য অনিক নিজেই আহত বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমি কেন তাদের মারতে যাব? আমি মারধর করিনি। তারা যে অভিযোগ করেছে সেটা মিথ্যা।”
হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।