বস্টনে আরিফ হত্যা: বিচার দাবিতে প্রবাসীদের বিক্ষোভ

আরিফের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে কেমব্রিজ শহরের চেস্টনাট স্ট্রিটে ৪ জানুয়ারি দুপুরে। বিচার প্রক্রিয়ার 'অগ্রগতি নেই' বলে প্রবাসীদের ক্ষোভ বেড়েছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2023, 02:47 PM
Updated : 31 Jan 2023, 02:47 PM

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সৈয়দ ফয়সাল আরিফের (২০) নিহত হওয়ার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে প্রবাসীরা।

রোববার বিকেলে বস্টনের আলাদা দুটি স্থানে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ থেকে গণসঙ্গীতের মাধ্যমে ঘাতক পুলিশদের শাস্তি এবং পুলিশি আইন সংস্কারের দাবি জানানো হয়।

আরিফের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে কেমব্রিজ শহরের চেস্টনাট স্ট্রিটে ৪ জানুয়ারি দুপুরে। পুলিশের দাবি, হটলাইনে তারা খবর পায় এক তরুণ ছোরা হাতে একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে বেরিয়েছে। তারপর সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয় এবং আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়লে প্রাণ যায় আরিফের।

কিন্তু পুলিশের এমন দাবি মানতে রাজি নন আরিফের স্বজন ও সহপাঠীরা। ৯ জানুয়ারি কেমব্রিজের মেয়র সুমবুল সিদ্দিকী কমিউনিটি ও শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন ‘সুষ্ঠু তদন্তের’। কিন্তু মেয়রের এমন আশ্বাসের পর ২২ দিন পেরোলেও কোন 'অগ্রগতি নেই' বলে প্রবাসীদের ক্ষোভ বেড়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড’ এর সভাপতি পারভিন চৌধুরী বলেন, “আমরা যখন ৯১১-এ কল করি, তখন পুলিশের বুলেট আশা করি না, সহায়তা চাই নিরাপত্তার জন্য।”

ফয়সালের শৈশবের সহপাঠী সারাহ হালাওয়া বলেন, “ফয়সাল তরুণ-তরুণীদের কর্মক্ষম করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন হাই স্কুলে পড়াবস্থায়। আর্ট প্রকল্পেও অংশ নেন। কমিউনিটির প্রায় ইভেন্টেই তিনি অনুবাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।”

যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, ক্ষোভ

বস্টনে আরিফ হত্যা: বিচার চায় প্রবাসীরা, প্রশাসনের আশ্বাস

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ম্যাসিয়েল টরেস ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজে বাস করছি যেখানে নজরদারি রয়েছে এবং যেকোন সময় খুন হওয়ার আশঙ্কায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা হরদম ঘটছে এবং অসহায় নাগরিকেরা কোন বিচার পাচ্ছে না।“

এদিকে আরিফ হত্যায় জড়িতদের নাম এখনও প্রকাশ করেনি পুলিশ। কয়েকজন কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, সিটি মেয়র ও সিটি কাউন্সিল এ নিয়ে কয়েক দফা শুনানিতে মিলিত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যে এলাকায় পুলিশ ধাওয়া করেছিল আরিফকে এবং যেখানে তাকে গুলি করা হয়- তার আশপাশে কোন সিসি ক্যামেরা নেই।

মা-বাবার একমাত্র ছেলে আরিফ বছর সাতেক আগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ২০ বছর বয়সী এ তরুণ পড়ালেখা করছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস- এর বস্টন ক্যাম্পাসে।

আরিফের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিইথ জোন্স (৪৯) বিক্ষোভ সমাবেশে এসেছিলেন তার ৭ ও ৯ বছর বয়সী দুই সন্তানসহ। তিনি বলেন, “আমি তাদেরকে এ কমিউনিটির শান্তি-সম্প্রীতির প্রশ্নে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা দেখাতে এনেছি। ওরা বড় হয়ে যাতে নিজের অধিকার-মর্যাদার প্রশ্নে সোচ্চার থাকে।”

বস্টনের ওয়েস্টফোর্ড একাডেমিতে সাহিত্যের শিক্ষক হোযে আলেমন (৫৯) বলেন, "গুলি করে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না। এজন্য দরকার সম্প্রীতির বন্ধন সংহত করা।"