১৫ অগাস্টের খুনিরা হাসিনা-রেহানাকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল: গওহর রিজভী

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বলছেন, বঙ্গন্ধুর দুই মেয়েকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল বিদেশে।

লন্ডন প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 05:03 PM
Updated : 16 August 2022, 05:03 PM

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীরা বিদেশের মাটিতে তার দুই মেয়েকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলেও সফল হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

তিনি বলেছেন, “১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পিছনে যে খুনিরা ছিল, তারা বিদেশেও শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু তখন তারা যে দেশে ছিলেন, সে দেশের সরকার তা প্রতিহত করে।”

বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে সোমবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ বক্তব্য দেন বলে মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

গওহর রিজভী বলেন, “জাতির পিতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই শুরু হয়েছিল।

“কোনো কোনোটি ছিল ব্যক্তি বিশেষের ষড়যন্ত্র, কোনোটির পিছনে ছিল সম্মিলিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নয়।”

স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র গঠনে জাতির পিতার ভূমিকা উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, “বঙ্গবন্ধু একটি প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার গোড়াপত্তন করেছিলেন।

“তাকে নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়াই ছিল খুনিদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এসবের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। যথাযথ সময়ে সেসব প্রকাশ করা হবে।”

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠানে বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

“এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড মানব ইতিহাসের নজিরবিহীন বর্বরতার ঘটনা এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন – যা আব্রাহাম লিঙ্কন, মহাত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং এবং জন এফ কেনেডির মত অন্যান্য সমসাময়িক নেতাদের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।”

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের একটি বার্তা পড়ে শোনানো হয় এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া বিরোধীদলীয় ও লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ের স্টারমারের একটি ভিডিও বার্তা এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্মীত বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ অগাস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়।

এ সময় অতিথি এবং মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন হাই কমিশনার।

আলোচনা পর্বে ব্রিটেনের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিষয়ক শ্যাডো মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশের ভাইস চেয়ার লর্ড শেখ, একাত্তরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে গঠিত স্টুডেন্ট অ্যাকশন কমিটির অন্যতম সদস্য সৈয়দ মোজাম্মেল আলী বক্তব্য দেন।