ওই তিন পরিবার জার্মানির ব্যাভারিয়া প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নুরেমবার্গের বাসিন্দা।
এ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী টেলিভিশনে জানিয়েছেন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আর এখন অতীতের সকল সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।
তিনি বলেন, “লক ডাউন দীর্ঘায়িত করা ছাড়া কোন উপায় নেই। জনগণকে অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে, তা না হলে এর থেকে পরিত্রাণের পথ দুষ্কর হয়ে যাবে।”
করোনার প্রথম ঢেউয়ে নুরেমবার্গের কোনও বাঙালি পরিবার আক্রান্ত হয়নি। দ্বিতীয় দফায় যে তিনটি পরিবার আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে আমার এক বন্ধুসহ তার পরিবারও রয়েছে।
সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রাতঃভ্রমণের খবরাখবর জানতে সময় তাকে ফোন করায় তিনি বললেন, “দোস্ত আমি তো হাসপাতালে। আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।"
এর কয়েকদিন আগে থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। দুইদিন ধরে জ্বর ছিল আর দুর্বল বোধ করছিলেন।
এছাড়াও তার হৃদপিণ্ডের এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা ছিল। এরপর কিছুটা শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তিনি অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। চিকিৎসক এসে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে তাকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার জন্য কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তবে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আমার সেই বন্ধুর নাম হুমায়ুন কবির। তিনি, তার স্ত্রী ও কন্যাকে বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পরামর্শ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে কবিরের স্ত্রী ও কন্যার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পর তাদেরও করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে নিশ্চিত করে।
কিন্তু তাদের কোনও বড় ধরনের সমস্যা ছিল না বিধায় বাসায়ই থাকতে বলা হয়। তবে কোন ওষুধ দেওয়া হয়নি। মোট কথা এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য জার্মানিতে কোনও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। বাসায় থাকতে এবং যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রোগীদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এমন ফল খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যথেষ্ট ভিটামিন গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খাবারের মাধ্যমে। আমার বন্ধু এবং তার পরিবার এখন সুস্থ। তাজুল ইসলাম বলে আরেকজনের পরিবারের সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারাও এখন সুস্থ।
খলিলুর রহমান বলে আরেকজনের পরিবার কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন তারা সুস্থ হয়ে উঠেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুুক আমার আরেক বন্ধুও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন। আমার এ বন্ধুটি জুয়া খেলায় আসক্ত।
সে বললো, “আমার করোনা হয়েছিল সেটা মেনে নিলাম, লক ডাউন মেনে নিলাম। কিন্তু ক্যাসিনো বন্ধ এটা মেনে নিতে পারছি না।”
আমি তাকে বললাম, “কেন তুই তো অন লাইনে জুয়া খেলতে পারিস।
সে বললো, “অনলাইনে মজা হয় না। ক্যাসিনোর পরিবেশই আলাদা। মেশিনের মিউজিক এসব কী ইন্টারনেটে বসে হয়। ইন্টারনেটে বসে চ্যাট হয়, সেট অনেকটা বাংলা চ্যাটের মত। সেখানে কী নারীর প্রেমময় ছোঁয়া পাওয়া যায়?”
আমি তার দুঃখে সমবেদনা জানিয়ে ফোন ছাড়লাম।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |