নিউ ইয়র্কে ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পে করোনাভাইরাস টেস্ট করলেন ৪০০ প্রবাসী

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে করোনাভাইরাস টেস্টের ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্প, যাতে সংক্রমিত কিনা তা পরীক্ষার জন্য অংশ নেন ৪০০ জন বাংলাদেশি। 

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2020, 09:11 PM
Updated : 14 June 2020, 09:11 PM

স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস এলাকার ডাইভার্সিটি প্লাজায় এ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।

মার্কস হোমকেয়ারের সহায়তায় এ আয়োজন করেন কমিউনিটি লিডার কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, আব্দুর রহিম হাওলাদার, মোহাম্মদ হোসেন খান, শানেয়াজ, জয় চৌধুরী, ফারুক হোসেন মজুমদার প্রমুখ।

বেলা ১২টা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা এ ক্যাম্পের সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।

শতশত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার বাধ্যাবাধকতা থাকায় ৪০০ জনের টেস্ট করা সম্ভব হয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানান। অবশিষ্টদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে কাছের হাসপাতালে গিয়ে টেস্ট করতে।

এছাড়া, একই উদ্যোক্তাদের ব্যবস্থাপনায় আগামী ২৬ জুন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সামনে অনুষ্ঠেয় ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেও যাবার অনুরোধ করা হয়েছে।

কাজী আজম এবং ফিরোজ আহমেদের নেতৃত্বে এর আগে ৫ জুন ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে অনুষ্ঠিত ভ্রাম্যমাণ টেস্ট সেন্টারেও ৩০০-রও বেশি প্রবাসী অংশ নেন।

মার্চ থেকে মে মাসে নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন এলাকায় কোভিড-১৯ সবচেয়ে মারাত্নক আকার ধারণ করে। মার্চের শেষ ও এপ্রিল জুড়ে এখানকার এলমহার্স্ট হাসপাতালের বারান্দা অথবা জরুরি বিভাগের বিশ্রামাগারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের তালিকা এখনও পুরোপুরি করা সম্ভব হয়নি। 

জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় করোনা টেস্টের ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্প।

ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রিয়-পরিচিতজনের মাধ্যমে মৃতদের তালিকা তৈরি করছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো, যার মধ্যে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিও রয়েছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে নিউ ইয়র্ক সিটিতে মারা গেছে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ। এখনও অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও নতুন সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর হার কমে এসেছে।

এ কারণে ৮ জুন থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার প্রথম ধাপে পদার্পণ করেছে নিউ ইয়র্ক সিটি। ২২ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে অফিস পাড়া, রিয়েল এস্টেট এবং সেলুন খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।

নিউ ইয়র্ক সিটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে দুইশ-রও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন।

এদিকে,  নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রথম ধাপে কন্সট্রাকশন কাজ, কল-কারখানা খুলে দেওয়া হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকলকে মাস্ক পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাস্তার পাশের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিলেও সরাসরি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব দোকান থেকে কেবল অনলাইনে অর্ডারকারিরা নিজ নিজ পণ্য সংগ্রহ করবেন। পাইকারি বাজার থেকে পণ্য সরবরাহেরও অনুমতি রয়েছে।

জরুরি পণ্য ও খাদ্য-সামগ্রীর স্টোর, রেস্তোরাঁ সবসময়ই খোলা রাখার অনুমতি থাকলেও এখন পর্যন্ত  রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেজন্য ৬ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আগের মতো এখনও  রেস্তোরাঁ থেকে খাবার প্যাকেটে করে বাসায় নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। 

নিয়ম ভাঙার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ মালিককে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁও রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, “করোনাভাইরাসকে অবজ্ঞা করলে নিজেই মহাবিপদ ডেকে আনবেন। কারণ, এটির কোন বাছবিচার নেই। তাই নিজের স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা জরুরী। শুরুতে আমরা অনেকেই একে আমলে নিতে চাইনি বলেই পরিচিত অনেককেই অকালে হারিয়েছি।”

কাজী আজম এবং ফিরোজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জুলাইয়ের শুরুতেই ব্রঙ্কসেও ভ্রাম্যমাণ টেস্টিং ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!