পরিবেশ দূষণ রোধে মিলানে বৃক্ষবাড়ি

ইতালিতে পরিবেশ দূষণ রোধ করতে ‘বস্কো ভেরটিকালে’ নামে ভিন্ন ধরনের দুটি বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়েছে। দেশটির বাণিজ্যিক শহর মিলানের ‘পরতা গারিবালদি’ রেলস্টেশনের কাছেই এ ভবন দুটি দেখা যায়।

সাইফুল ইসলাম মুন্সী, ইতালি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2020, 07:50 AM
Updated : 2 Jan 2020, 07:50 AM

ছোটবড় প্রায় নয়শ গাছপালা আর প্রায় পাঁচ হাজার ঝোপঝাড় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভবন দুটি। স্থানীয় প্রবাসী বাঙালিদের ভাষায় এদেরকে ‘বৃক্ষবাড়ি’ বলা হয়।

প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক পর্যটক আসে বাড়ি দুটি দেখতে। সেইসঙ্গে মিলানে বসবাসরত অনেক প্রবাসী বাঙালিরা প্রতিদিন ভিড় জমায় এই বৃক্ষবাড়ি দেখতে।

এছাড়া বাড়িটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল এক পার্ক। দিনশেষে পড়ন্ত বিকেলে বাড়িটি দেখতে অনেক বাঙালি পরিবার ভিড় জমায় এই পার্কে। 

‘হিন্স ইতালিয়া’ ও ‘কলিমা’ নামে দুটি ডেভেলপার কোম্পানির নেতৃত্বে ভবন দুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালের শেষের দিকে। প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক মিলে ২০১৪ সালের অক্টোবরে ভবন দুটির নির্মাণ কাজ শেষ করে। ২০১২ সালে একটি ভবন আর্ট গ্যালারি হিসেবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর ভবন দুটি পুরোপুরি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

ভবনের বাসিন্দা ফ্রাঞ্চেস্কা বলেন, “জায়গাটি অত্যন্ত ভিন্ন ধরনের। প্রথম দেখাতেই বিভিন্ন ধরনের গাছপালা আমার মন কেড়েছিল। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এখানেই বসবাস শুরু করব। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৭ সাল থেকে দুই সন্তানসহ আমি ও আমার স্বামী এখানে বসবাস শুরু করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “চারদিকে যখন পরিবেশ দূষণের এতো খবর পাই ঠিক তখন চিন্তা করি আমি একটি বাগানের মধ্যে শুয়ে আছি। এটি আমার জন্য অনেক প্রশান্তিময়।”

স্থানীয় পরিবেশবিদরা মনে করেন, ভবনের বৃক্ষগুলো আমাদের বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেনে রূপান্তরিত করে। আর এতে এখানকার মানুষজন খুবই সজীবতা পায়।

এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি সানবির বলেন, “বাড়ি দুটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। আগে কখনো এরকম বাড়ি কোথাও দেখিনি। আমি কাজের ছুটি পেলেই এই পার্কে এসে বসে থাকি। কারণ এখানকার বাতাস আমার কাছে একটু বেশি ফ্রেশ মনে হয়।”

১১১ মিটার ও ৭৬ মিটার উচ্চতার ভবন দুটিতে রয়েছে ছোট-বড় প্রায় নয়শ বৃক্ষ, পাঁচ হাজারের মতো ঝোপ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রায় এগারো হাজার গাছপালা। বর্তমানে এখানে প্রায় দুইশর বেশি পরিবার বসবাস করছে।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!