উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রকেও হার মানিয়েছে বাংলাদেশ: নাহিদ

‘উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রকেও বাংলাদেশ হার মানিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার নুরুল ইসলাম নাহিদ।

স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের কুইন্সে একটি মিলনায়তনে ‘বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জবাসী’ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সমাবেশে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন সারা বিশ্বের এক বিস্ময়। একটি অনুন্নত দেশ হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি আমেরিকার উন্নয়নকেও হার মানিয়েছে। একটি অতি উন্নত দেশ হিসেবে গত বিশ বছরে আমেরিকার উন্নয়নের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়েছে বাংলাদেশ।”

জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান। এরই অংশ হিসেবে এখন তিনি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন সারা বিশ্বের নজর কাড়লেও দুর্নীতিতে দেশটি আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিল। এই অবস্থা থেকে একটি দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন, জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করেছে সরকার, যার প্রেক্ষিতে এখন বড় বড় রাঘব বোয়ালদের ধরা হচ্ছে। দুর্নীতিবিরোধী এ অভিযানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

সাবেক এ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরাজিত শক্তি বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়নের চাকাকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত করেছে। এরই অংশ হিসেবে তারা সপরিবারে হত্যা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ১৯৯৬ সালে প্রথম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর চক্রান্তের নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত আবারও ক্ষমতায় এসে দেশে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের জন্ম দিয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে পুণরায় ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নের এক মহাপরিকল্পনা দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে মাঝারি শ্রেণির দেশের তালিকাতে নিজের অবস্থান নিয়েছে। নারীশিক্ষা, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার জাতিসংঘের মানদণ্ডে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ।

“বিএনপি-জামাতের শাসনামলে মাথাপিছু ইনকাম ছিল ৫০ ডলার। এখন তা দুই হাজার ডলার হয়েছে। দলীয় শিক্ষানীতি নয়, একটি জাতীয় শিক্ষানীতির আওতায় সার্বজনীন মানবিক একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি, যা দেশে বিদেশে প্রশংসা পেয়েছে।”

নিজ নির্বাচনী এলাকা প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে শিক্ষাক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে। সিলেট এক সময় শিক্ষায় অনেক পিছিয়ে পড়েছিলো। এই অবস্থা এখন অনেকটা কাটিয়ে আনা হয়েছে। আগামীতে সিলেট তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে বলে আমরা আশা করছি।”

স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন প্রসঙ্গে নাহিদ আরও বলেন, “কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য রয়েছে একটি হেলথ ক্লিনিক। যার ফলে এখন যেকোন অসুখ-বিসুখে যে কেউ চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন। এর ফলে দেশে অকাল মুত্যুর হার কমেছে।

“খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় এখন ‘মঙ্গা’ নামের শব্দটি আর শোনা যায় না। এর সঙ্গে সুষম খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে গণসচেতনতা বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে মানুষের গড় আয়ু এখন আগের চাইতে অনেক বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের’ সাবেক সভাপতি অহিদুর রহমান মুক্তা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘বাংলাদেশ সোসাইটির’ সভাপতি কামাল আহমেদ ও মহিউদ্দীন মহি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ‘বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতির’ সভাপতি মোস্তফা কামাল এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলাবাসীর পক্ষে হেলিম আহমদ।

আরও বক্তব্য দেন আইরীন পারভীন, আব্দুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস টিটো, কমর উদ্দীন, আব্দুল হাসিব, কবির আহমদ চৌধুরী, হেলাল আহমদ, সফর উদ্দীন লোদি ও সাব্বির আহমদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শামীম আহমদ ও ওয়াহিদ পারভেজ।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [e-mail]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!