ইস্তাম্বুল প্রবাসীদের ঈদ পুনর্মিলনী

পরিবার-পরিজন ছাড়া প্রবাসে ঈদ কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।  তাই ঈদের দিনে নানা আয়োজনে ব্যস্ত থেকে মনে লুকানো বেদনা আর আক্ষেপ ঘোচানোর চেষ্টা করে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।  আর এক্ষেত্রে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানই হচ্ছে  প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুসঙ্গ।

আবদুল্লাহ জাভেদ, তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2019, 01:52 PM
Updated : 9 June 2019, 01:53 PM

এর মধ্যে দিয়ে স্বজনদের অভাবটা পূরণ হয়  না বটে, তবে স্বদেশীদের সানিধ্যে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন।

এককালের অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী এশিয়া ও ইউরোপে সংযোগস্থল তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে ঈদ পুনর্মিলনীর উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।
গত ৪ মে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর দিনে ইস্তাম্বুল শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নান্দনিক পর্যটনকেন্দ্র পোলোনেজকয়তে দিনব্যাপী বর্ণিল  এই  আয়োজনে  অংশ নেন শিক্ষার্থীসহ শতাধিক  প্রবাসী বাংলাদেশি।
সকালে  ‘ব্লু মস্ক’ খ্যাত বিশ্ব সেরা সুলতান আহমেদ মসজিদে ঈদের নামাজ শেষে পারষ্পরিক কুশল বিনিময়ের পর  ঈদের নাস্তা খেয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানস্থলে দিকে রওনা হন প্রবাসীরা ।

দুইটি বড় বাসে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক আয়োজনে পুরো পথ জুড়ে এক উৎসবের স্মৃতি গড়ে তুলে। বসফরাস প্রণালী, পাহাড় ও গ্রামের আঁকাবাঁকা পথে সবুজ শ্যামল দৃশ্য এ যাত্রায় ভিন্ন আমেজ এনে দেয়।

দুপুরের আগেই গাড়ি পৌঁছে পার্কে। গাড়ি থেকে নামতে না নামতে খেলাপ্রেমিরা মাঠের দিকে ছুটে যান। একদিকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উত্তাপ অন্যদিকে দূর প্রবাসে খেলার আমেজ এ যেন একসূত্রে গেঁথে যায়। চারটি দলে বিভক্ত হয়ে খেলা আরম্ভ হয়।

খেলার মাঠে মারমারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিদ্বন্দ্বি আলতেনবাশ বিশ্ববিদ্যালয়কে এবং সাবাহউদ্দিন জাইম বিশ্ববিদ্যালয় তাদের প্রতিদ্বন্দ্বি ইবনে খালদুন বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পরষ্পর মুখোমুখি হয়। ফাইনাল খেলায় মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে জাইম বিশ্ববিদ্যালয় বিজয় লাভ করে।

অন্যদিকে অভিজ্ঞ দেশীয় পদ্ধতিতে রকমারি খাবারের আয়োজন চলতে থাকে। মাঙ্গাল (বারবিকিউ) আয়োজনের সময় ঘ্রাণে ক্ষুধার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। খেলার পরে সবাই দুপুরের খাবার খেতে বসেন।

বিকাল গড়ানোর খানিক আগেই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য, মিমার সিনান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি অধ্যয়নরত  আ ব ম নুরুল আবছারের সঞ্চালনায় বর্ণিল উৎসবের বাকি আয়োজন শুরু হয়।

এ পর্বে ছিল হাঁড়ি ভাঙা খেলা, নারীদের বালিশ খেলা, বাচ্চাদের বেলুন খেলা, বিবাহিত ও অবিবাহিতদের জনপ্রিয় দড়ি টানাটানি খেলা হয়। দড়ি খেলায় অবিবাহিত দল জয়লাভ করে। পাশাপাশি উপস্থিত অভিনয় প্রতিযোগিতা হয়।  এছাড়াও চলে ঈদ স্মৃতিচারণ।

সন্ধ্যা গড়ানোর আগে পুরস্কার বিতরণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিল এই আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ায় সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক হেলালী।

রাতে ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠানে সবাই এক সাথে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন। নৈশভোজের মধ্য দিয়ে  অনুষ্ঠান শেষ হয়।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!