ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি

বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকার ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2019, 03:53 AM
Updated : 2 Feb 2019, 03:53 AM

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদযাপন’ উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে এ অঙ্গিকারের কথা জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “আমরা পাহাড়ি জেলাগুলোতে তিনটিসহ মোট সাতটি বিশেষায়িত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি যা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব উপজাতীয় সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য ও ভাষার প্রসার ও সংরক্ষণে কাজ করছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভাষার সংরক্ষণ গবেষণা ও এ সংক্রান্ত মেধাভিত্তিক কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছে। আমরা বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীদের নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাঁচটি নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে প্রায় ১৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাতৃভাষায় শিক্ষা দিচ্ছে।”

‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ’ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের নিজস্ব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচয়, ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমি ও সম্পদ সংরক্ষণে কাজ করছি। আমাদের সব জাতীয় নীতি, কর্মসূচি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় তাদের অধিকার সংরক্ষণ করেছি যার স্বীকৃতি হিসেবে ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক ‘কালচালার ডাইভার্সিটি’ পুরস্কার দিয়েছে।”

মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের ইতিহাস উল্লেখ করে মাসুদ বলেন, “এটা আনন্দের বিষয় যে এবছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ও ‘ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ একসঙ্গে উযাপন করা হচ্ছে। উভয় উদযাপনই ভাষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ ভাষা ও সংস্কৃতি হচ্ছে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়টিকে সমুন্নত রাখার নির্ণায়ক। আর এবছরই বাংলাদেশের আনা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গ্রহণের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। সবমিলিয়ে ভাষা, সংস্কৃতি ও শান্তির মেলবন্ধনে অর্জিত আমাদের একতাকেই আমরা যেন মহাসমারোহে উদযাপন করতে যাচ্ছি।”

অধিবেশনের সভাপতি মারিয়া ফার্নান্দা এসপিনোসা গার্সেজ এ অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। এরপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বলিভিয়ার রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস।

সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লিউ জেনমিন, ইউনেস্কোর সংস্কৃতি বিষয়ক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আর্নেস্টো অটোনি রামিরেজ ও ‘স্থানীয় ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ উদযাপনের পরিচালনা কমিটির চারজন কো-চেয়ার।

এছাড়া কানাডার নর্দান ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ডের কোকোয়াকা ভাষাভাষী জনগণ তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!