স্পেনের আলিকান্তে ও এলচেতে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা

অর্থনৈতিক কূটনীতির অংশ হিসেবে এ দুটি অঞ্চল পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও তার প্রতিনিধিদল।

কবির আল মাহমুদস্পেনের মাদ্রিদ থেকে
Published : 3 March 2024, 06:55 AM
Updated : 3 March 2024, 06:55 AM

স্পেনের চামড়াজাত পণ্য ও জুতোর রাজধানী হিসেবে পরিচিত এলচে ও আলিকান্তে অঞ্চলে বাংলাদেশের ‘ব্যবসায়িক সম্ভাবনা’ খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস।

অর্থনৈতিক কূটনীতির অংশ হিসেবে গত ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি সেখানে কয়েকটি বৈঠকে যোগদান এবং কারখানা পরিদর্শন করেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও তার প্রতিনিধিদল।

বুধবার দূতাবাসের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনকূটনীতি ও ওইসব এলাকায় কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের কনস্যুলার ও কল্যাণ কার্যক্রম সহজিকরণ বিষয়ক বৈঠক করেন রাষ্ট্রদূত। এসময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ ও স্পেন-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ঢাকার সভাপতি আশিক এলাহি চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদল স্পেনের জুতোর ব্র্যান্ড পিকোলিনোসের কারখানা পরিদর্শন করেন। পিকোলিনোস গ্রুপ গত প্রায় ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশের উন্নতমানের চামড়া ব্যবহার করে জুতো ও ব্যাগসহ চামড়াজাত পণ্য তৈরি করে আসছে।

এসময় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোসে মিগেল গার্সিয়া বাংলাদেশি চামড়া দিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন। কোম্পানির প্রেসিডেন্ট খুয়ান ম্যানুয়েল পেরান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদল এলচের অদূরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত একটি কৃষি খামার পরিদর্শন করেন। খামারের উদ্যোক্তারা জানান, খামারে উৎপাদিত সবজি স্পেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশকিছু দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত এ ধরনের কাজের প্রশংসা করেন এবং তাদের বহুমুখী ব্যবসায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তারপর রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদল আলিকান্ত চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন। সভায় চেম্বারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট খেসুস নাভারো আলবেরোলাসহ আলিকান্তের ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেন।বৈঠকে রাষ্ট্রদূত আলিকান্তের ব্যবসায়ী নেতাদের দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

এ বৈঠকে স্পেনের মশলা ব্র্যান্ড কারমেনসিটা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড লোপেজ, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সেন্ট্রাম, তৈরি পোশাক (আরএমজি) কোম্পানি জোসে মনলোর এসএল থেকে খাভিয়ের আর্টেগা, রাসায়নিক কোম্পানি ইনসোকো থেকে আলেহান্দ্রো রিবেলস, চামড়াজাত পণ্যের কোম্পানি সানচেজ আগুলোর থেকে খোসে আন্তোনিও সানচেজ ও পিকোলিনোসের রোজানা পেরানসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া আলিকান্ত ও এর আশপাশের এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে মতবিনিময় করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং সমাধান দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনীতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে ক্রমশ বেরিয়ে এসে শিল্প ও সেবাখাতমুখী হয়েছে আমাদের অর্থনীতি। উন্নয়নের মহাসড়কে ছুটে চলা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ এখন সাহায্যগ্রহীতা নয়, সাহায্যদাতার কাতারে উঠে এসেছে।”