গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সাফল্য’: বিএনপি

“আমরা হরতাল, অবরোধ এর আগে করি নাই বা করতে পারি নাই- তা নয়; কিন্তু যখন তখন করব কেন,” বলেন নজরুল ইসলাম খান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2022, 09:45 AM
Updated : 9 August 2022, 09:45 AM

নতুন সাত দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশকে ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সাফল্য’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, “গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা যেসব দাবি উল্লেখ করেছেন, এই দাবিগুলো আমরাও দীর্ঘদিন যাবৎ করে আসছি যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে... তাদের দাবিতে আছে আমরা দেখলাম।

“কাজেই আমি মনে করি, এটা আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে প্রয়াস দীর্ঘদিন ধরে আমরা চালিয়ে আসছি, সেটা তার একটা সাফল্য। আগামী দিনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পক্ষে এটা একটা অগ্রগতি বলে আমরা মনে করি।”

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নতুন জোট নিয়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান দলটির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

আগের দিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ জোটের যাত্রা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

জেএসডির সঙ্গে এই জোটে আছে নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

মঙ্গলবার যুবদলের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যে প্রক্রিয়ায় তাদের আন্দোলন চলছে, তাতে সরকার হঠানো বা দাবি আদায় সম্ভব না।

সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নজরুল ইসলাম বলেন, “আপনারা জানেন যে, ২০১৪-১৫ সালের দিকে কেমন আন্দোলন হয়েছে, প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসা বলেছিলেন, ‘এটা এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নয়, এটা গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকা সরকার’। কারণ গোটা বাংলাদেশের ওপর এই সরকারের আর কোনো প্রভাব নাই।

“তারপরেও অনেক মন্ত্রীরা আছেন, তারা বলেন, আমরা নাকি আন্দোলন করতে পারি না। এখন তারা আন্দোলন বলতে যা বোঝেন, এগুলো যদি সবাই বুঝতে চান, তাহলে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আন্দোলন মানে হচ্ছে জনগণের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। সেটা হরতালের মাধ্যমে হতে পারে, আরো বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে এবং মনে রাখতে হবে, আমরা স্লোগান দিতে পারি না- তা নয়; কিন্তু যখন-তখন দেব কেন? “

নজরুল বলেন, “আমরা হরতাল করি না বা করতে পারি না- তা নয়; কিন্তু যখন তখন করব কেন? আমরা অবরোধ এর আগে করি নাই বা করতে পারি নাই- তা নয়; কিন্তু যখন তখন করব কেন? যখন করার সিদ্ধান্ত হবে, আপনারা জানতে পারবেন। “

বিএনপির এই নেতার ভাষায়, জনগণের মধ্যে ‘ক্ষোভ’ কাজ করছে, সে কারণেই বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণ ‘সম্পৃক্ত’ হবে।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপি ‘বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম’ গঠনে যাবে কি না- এ প্রশ্নে নজরুল বলেন, “আপনারা ভালো জানেন এটা। এই ব্যাপারগুলো আলোচনার মাধ্যমে হয়, শিগগিরই আপনারা জানতে পারবেন।”

সরকারের উদ্দেশে নজরুল বলেন, “মানুষ যখন ভয় পায়, অন্ধকারের মধ্যে রাত্রে হাঁটতে গেলে জোরে জোরে গান গায়। এটা এই কারণে যে, তারা ভয় পাচ্ছে। ওদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বড় বিপদে আছে তারা।”

আশুরা উপলক্ষে এদিন নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়। তার আগে আলোচনা সভা হয়।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, শামীমুর রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক আবদুল বারী ড্যানি, উলামা দলের যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম আলোচনায় অংশ নেন।

উলামা দলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিক হাওলাদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের সুমন ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।