পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটের দিন বাড়তি পদক্ষেপ নেবে নির্বাচন কমিশন।
Published : 18 May 2023, 09:53 PM
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা বড় ধরনের গোলযোগের শঙ্কা দেখছে না নির্বাচন কমিশন; তারপরও যে কোনো পরিস্থিতির জন্য্য প্রস্তুতি রাখার কথা বলেছে পুলিশ।
পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটের দিন কমিশনের বাড়তি পদক্ষেপ থাকবে; শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে কমিশনকে সহায়তায় ব্যবস্থাও নিয়েছে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাহিনী ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশন সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শক সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বিকাল ৩টা থেকে এই সভা হয়। পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি চার নির্বাচন কমিশনারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের পাঁচ সিটিতে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে আগামী ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন বরিশাল ও খুলনা এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট হবে।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের সঙ্গে সভা করেছে। জননিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কার্যক্রম কীভাবে সমন্বয় হবে সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। যেসব পরামর্শ এসেছে, কমিশন সে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেসব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে।
“উপস্থিত সকলেই সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। যে যার অবস্থান থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনে সর্বাত্মক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে। মাঠ প্রশাসন থেকে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে এই নির্বাচন ঘিরে বড় ধরেনর কোনো নাশকতা বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো শঙ্কা নেই।”
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নির্বাচনের সময় কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
“বৈঠকে তফসিল ঘোষিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আমাদের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের নির্দেশনা দিয়েছে। সকল সংস্থার কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে, সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
“আমরা সহযোগিতা প্রদান ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি। …নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র অনুযায়ী অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেসব কার্যক্রম গ্রহণ প্রয়োজন তা গ্রহণ করব।”
এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানীয় ইউনিট সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কাজ করছে বলে জানান পুলিশ প্রধান।
এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, “সিটি নির্বাচনে কোনো ধরনের কোন চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়নি। আমরা আশা করছি, একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
“ভোটের দিনে শঙ্কা আমরা দেখছি না। তবে যে কোনো ধরনের উদ্ভূত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
গুজব ও মিথ্যা প্রচারণা ঠেকাতে পরামর্শ, নেটের ধীর গতি নয়
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অতীতের মিথ্যা প্রচারণার অভিজ্ঞতা আলোকে ভোটের দিন ইন্টারনেটের গতি মন্থর করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে কমিশন এ প্রস্তাবে সায় দেয়নি।
বৈঠকে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি করা হলে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এবং দেশে-বিদেশে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কমিশনের কাজেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
গত ১৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটের সময় মোবাইল সেবায় ‘বিঘ্ন’ ঘটলে জনমনে তা সন্দেহের সৃষ্টি করে। তার প্রত্যাশা, সরকারও বিষয়টা বুঝবে।
সভায় কমিশনের পক্ষ থেকে 'হলুদ সাংবাদিকতা' এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের প্রচার ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া যাবে না তবে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।