জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশের বাজারে কেন কমে না সেই প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার সকালে নয়া পল্টনে কৃষক দলের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এখন কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। আমাদের হাছান মাহমুদ (তথ্যমন্ত্রী) সাহেব বললেন, বিশ্বের সব দেশে নাকি তেলের দাম আমাদের চেয়ে বেশি।
“আমেরিকাতে ১৪ ডলার ছিল, তেলের দাম কমানোর সঙ্গে সঙ্গে তা ৩ ডলারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমছে, তখন তারাও কমায়; কিন্তু আমাদের দেশে তেলের দাম বাড়ানো হয়।”
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে তার অভিযোগ, “তারা যে লুটপাট করে, তারা যে চুরি করে, দুর্নীতি করে, সেই টাকাকে হালাল করার জন্য জনগণের পকেট থেকে কেড়ে নিয়ে যায়।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “বলছেন যে, পেট্রোলিয়াম করপোরেশন লোকসানে যাচ্ছে। লোকসানে কেন যাবে? ৫ বছর তো এই প্রতিষ্ঠান লাভ করেছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিল। কিন্তু আপনারা কমাননি।
“দেশে কিছু মানুষকে আপনারা ধনী থেকে আরও ধনী বানিয়েছেন। আর কিছু মানুষকে গরীব থেকে গরীবে নিয়ে গেছেন। বড় বড় বড়াই করেন, মিথ্যা তথ্য দেন। একটা তথ্যও তাদের সঠিক না। সমস্ত তথ্যগুলো হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করবার জন্য।”
তিনি বলেন, “পেট্রল-ডিজেল-অকটেন সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছেন, পানির দাম বাড়িয়েছেন, সারের বাড়িয়েছেন। কোথায় যাবে মানুষ?”
‘‘আপনাদের পকেটে বহু দুর্নীতির টাকা আছে, ঘুষের টাকা আছে। কিন্তু আমাদের পকেটে ভাই নিজের বেঁচে থাকার পয়সাটুকু শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, “আমরা সবাই সংঘবদ্ধ হচ্ছি, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। গতকাল (শনিবার) আমি সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানিয়েছি- আসুন আর নিজেদের মধ্যে ছোট-খাটো বিভেদ সৃষ্টি না করে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।
“ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, সেটা করি।”
গত ৩১ জুলাই ভোলার সমাবেশে পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম ও ছাত্রদলের নূরে আলমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ সমাবেশ ডাকে কৃষক দল।
সমাবেশে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আমিনুল হক, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।