‘আশ্বাসে’ অনশন থেকে সরলেন ইডেনের বহিষ্কৃতরা

আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে বহিষ্কৃত নেত্রীদের কয়েক দফা ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2022, 12:07 PM
Updated : 26 Sept 2022, 12:07 PM

ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় বহিষ্কৃতরা আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই কর্মসূচি থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন।

বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে সোমবার বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়ার পর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশন করতে যান তারা।

অনশন শুরুর আগে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে বহিষ্কৃত নেত্রীদের কয়েক দফা ধস্তাধস্তি হয়। তখন তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বেলা দেড়টার দিকে তারা ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পান। আধাঘণ্টা পর বের হয়ে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসার কথা জানান বহিষ্কৃত নেত্রীরা।

কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ১ নম্বর সহ সভাপতি সোনালী আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমাদের কথা শুনেছেন। আমাদের স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথাও জানিয়েছেন। তাই আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি থেকে সরে এসেছি। আপাতত আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই।”

তবে কোন নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে সেটি এড়িয়ে যান তিনি।

গত ২২ সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভাকে ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দেন সহ সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস।

এরপর শনিবার রাতে জান্নাতকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠে। এরপর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।

রোববার দুপুরে জান্নাতের সমর্থকরা ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈসহ ২০-২৫ জন পদধারী নেত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর পাল্টায় বিকালে সভাপতি রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে জান্নাতের সমর্থকরা বাধা দিলে হট্টগোল শুরু হয়; মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে আহত হন ১০ জন।

দিনভর উত্তেজনা আর মারামারির পর রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করার ঘোষণা আসে। সেইসঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১৬ জনকে বহিষ্কার করার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তাদের মধ্যে ১০ জনই সহ সভাপতি, যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরোধিতা করছিলেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন: ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সোনালী আক্তার, সুস্মিতা বাড়ে, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি ও সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিত্তি, সাংগাঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা ও সূচনা আক্তার।