নতুন কোনো বয়ান শুনতে জনগণ রাজি নয়, বলেন তিনি।
Published : 12 Nov 2024, 09:33 PM
জনগণকে বাইরে রেখে কোনো সংস্কার গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘যারা সংস্কারের কথা বলছেন সেই সংস্কার নিয়ে যদি চিন্তা করতে হয় জাতীয় ঐক্যমত্যের ব্যাপার রয়েছে। আর সংস্কারের সাথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, জনগণের সমর্থন থাকতে হবে সংস্কারে, জনমতের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার করতে হবে, জনগণের আস্থা নিয়ে সংস্কার করতে হবে।
”সেটা একমাত্র সম্ভব একটা নির্বাচিত সরকারের পক্ষে। অনির্বাচিত কোনো সরকার নিজের চিন্তা-ভাবনায়, নিজের ধারণায়, নিজেদের দর্শনে কারো কোনো সংস্কার করার সুযোগ নেই। প্রত্যেকটি দলকে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ সিদ্ধান্ত দেবে আগামী পার্লামেন্ট সেই সংস্কারগুলো সংসদে পাস করবে…কোনো সমস্যা তো নাই। কিন্তু জনগণেকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে সেই বয়ান জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।”
রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সম্মেলন কক্ষে ‘ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস’ সংগঠনের উদ্যোগে ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবুর রহমান উনি একটা বয়ান করেছেন, মানে বাংলাদেশ কীভাবে চলবে উনার একটা বয়ান ছিল, আবার স্বৈরাচার এরশাদের একটা বয়ান ছিল, আবার ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনার আরেকটা বয়ান ছিল। যে উন্নয়ন গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে চলে গেছে। এসব বয়ানে জনগনের সমর্থন ছিল না।
”যে সমস্ত বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত আছে সেই সমস্ত বিষয় তারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) সংস্কার করতে পারে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো আপত্তিও নাই। শুধু সেই ক‘টি সংস্কার যে সংস্কারের মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক অর্ডারে দ্রুত ফিরে যেতে পারি এবং সেটি জাতীয় ঐক্যমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে। বাকি সংস্কার দেশের জনগণের কাছে যেতে হবে ভোটের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব প্রস্তাব নিয়ে।”
আমীর খসরু বলেন, ‘‘কোনো নতুন বয়ান শুনতে জনগণ রাজি নয়। একমাত্র বয়ান হচ্ছে যে, নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের কাছে তার মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া।
”এই বয়ানের বাইরে বিভিন্ন বয়ান দিয়ে বিগত বছরগুলো যারা দেশ শাসন করেছে তাদেরকে জনগণ প্রত্যাখান করেছে। নতুন বয়ান হচ্ছে, বাংলাদেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে, গণতান্ত্রিক অর্ডারে ফিরে যেতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে।”
বিরোধী রাজনেতিক দলগুলো ‘ঐক্যবদ্ধভাবে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব’ বাস্তবায়ন করতে জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলেও তুলে ধরেন বিএনপির এই নেতা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক মজিবুর রহমান।
ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটসের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার ও সদস্য সচিব হুমায়ুন ব্যাপারীর সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফরিদুল আলম মজুমদার, কৃষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিনুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইফতেখার আলম মাসুম, অধ্যাপক মতিউর রহমান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী বক্তব্য রাখেন।