ভারতের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “তারা নিষ্ঠুর হাসিনাকে পছন্দ করে, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা তারা চায় না।”
Published : 05 Dec 2024, 03:43 PM
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমননা এবং আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে হামলা প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে রিজভী তার স্ত্রীর দেওয়া ভারতীয় শাড়ি রাস্তায় ফেলে দিলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন নেতা-কর্মীরা।
এ সময় রিজভী বলেন, “যারা আমার দেশের পতাকাকে নামিয়ে ছিঁড়ে দেয়, আমরা তাদের দেশের পণ্য বর্জন করব। আমাদের মা-বোনেরা তারা আর ভারতীয় শাড়ি কিনবে না। তারা ভারতের সাবান কিনবে না, তারা ভারতের টুথপেস্ট কিনবে না, তারা ভারতের কোনো কিছু কিনবে না।”
বাংলাদেশ স্বনির্ভর উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এদের (ভারত) মুখাপেক্ষী হব না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব।”
‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশী পণ্য ব্যবহার উৎসাহিত করতে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকে দলের সমর্থন জানিয়ে তার গায়ে থাকা কাশ্মীরি শাল পুড়িয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
ভারতীয়দের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছ। তোমরা আমাদেরকে পছন্দ করো না। তারপরও তোমাদের জিনিস আমাদের কিনতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ তো মাথানত করার মানুষ না। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকব, তারপরও আমরা মাথানত করব না।”
রিজভী বলেন, “ভারতের অনেক সাংবাদিক, অনেক রাজনৈতিক নেতা তারা বলেন, ‘আমাদের এখানে না আসলে আপনাদের চিকিৎসা হয় না। আমি প্রশ্ন করি, আরে আপনারা কি বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেন? আপনারা কি বিনা টাকায় এক কাপ চা খাওয়ান? এই নজির তো নাই আপনাদের।
'ভারতীয় পণ্য বর্জন': দলে আলোচনা ছাড়াই রিজভীর সংহতি?
“বাংলাদেশের লোক ডলার খরচ করে ওখানে গিয়ে। এখন কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ, সেখানে আর কোনো খরিদদার নাই। আমাদের ডলারে বাজার সদাই কেনা হতো।”
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “তারা নিষ্ঠুর হাসিনাকে পছন্দ করে, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা তারা চায় না। আজকে তারা নানা ধরনের উস্কানি দিচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে, বাংলাদেশের ভেতরে।
“কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের উস্কানিতে পা দেয়নি। দুই-একটা গোষ্ঠী থাকতে পারে, তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ যে আমাদের এখানে উস্কানি দিতে পারে এটা গোটা জাতি ধরে ফেলেছে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর যে ঐক্য এটা ইস্পাতকঠিন ঐক্য। এই ঐক্য কেউ ভাঙতে পারবে না।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জাহিদুল কবির, জাহা্ঙ্গীর আলম, তৌহিদুর রহমান আউয়ালও বক্তব্য রাখেন।