খালেদা জিয়ার ছেলের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের আগের দিন শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে অর্থ পাচারের মামলায় কারাদণ্ড দেয় আদালত। বিএনপি তখনো একে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ বলেছিল।
ফখরুল বলেন,“বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। চক্রান্ত চলছে। রোববার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলার রায় দেয়া হবে।
“জানি না কী রায় হবে। তবে এতটুকু বুঝতে পারি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা কোনো মামলাই সরকার প্রমাণ করতে পারেনি। এখন সরকারের নির্দেশে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়া হবে।”
লন্ডনে অবস্থানরত তারেক ও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
‘গাড়ি পোড়াচ্ছে সরকারের এজেন্টরা’
হরতালের সময়ে গাড়ি পোড়ানো ও হাতবোমা বিস্ফোরণে মানুষের প্রাণহানির ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে ফখরুল বলেন, “কারা আগুন দিয়ে বাস পোড়াচ্ছে, তা দেশের মানুষ জানে। বিরোধী দল এসব নাশকতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এসব ঘটনায় প্রাণহানিতে আমি নিন্দা জানাই।
“আমরা মনে করি, সরকারের এজেন্টরা এসব ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। বিরোধী দলসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের জড়ানোর জন্য সরকারের নীল নকশার অংশ হিসেবে এসব নাশকতার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।”
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ভাঙন ধরানোর জন্যও সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, “কিন্তু এতে কোনো কাজ হবে না। একদলীয় নির্বাচন এদেশের জনগণ হতে দেবে না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, “তাদের অপরাধ, তারা এক গোলটেবিল আলোচনায় সংলাপের কথা বলেছেন।
“আবদুল আউয়াল মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; তার অপরাধ, তিনি দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্কট সমাধানে উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন। বিরোধীদলীয় নেতার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাতে বিরোধীদলীয় নেতাকে দুর্বল করা যায়।”
এভাবে লাখ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সরকারকে বলতে চাই, এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না,” বলেন তিনি।
মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, নাজমুল হক নান্নু, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।