এই ইসি দিয়ে হবে না: এরশাদ

বিএনপি না গেলে নির্বাচনে যাবেন না- এই ঘোষণা দেয়ার পর এবার নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা হারানোর কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2013, 12:47 PM
Updated : 24 August 2013, 12:47 PM

শনিবার জাতীয় ছাত্র সমাজের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।”

নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘আজ্ঞাবাহী’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলেও মনে করেন জাপা চেয়ারম্যান, যে সরকারের তার দলের অংশীদারিত্বও রয়েছে।

“আমি কখনোই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে ছিলাম না। আমি পক্ষে ছিলাম স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের। আমি চেয়েছিলাম এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, যা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তা ঘটেনি।”

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পাশাপাশি সরকার পদ্ধতির পরিবর্তন প্রয়োজন বলেও মনে করেন গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক।

“আমার কারণেই সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা এসেছে। এরশাদ যদি দাঁড়ায় তাহলে আবার জয়ী হবে- এ কারণেই সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা এনেছেন।”

“কিন্তু সংসদীয় সরকার পদ্ধতি যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ, তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। তাই সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করুন এবং রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনুন।”

প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে মহাজোটের এই নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা রাজনীতির ভাষা নয়। ডেমোক্রেসি অর্থ সংযম, সমঝোতা, শান্তিপূর্ণভাবে সঙ্কট সমাধান। পরমতসহিষ্ণুতা ছাড়া গণতন্ত্র চলতে পারে না।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, “হরতাল করা আমার সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা হরতালকারীদের হত্যার কথা বলে, তারা সুস্থ নয়।”

মহাজোট সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আপনাদের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। শূন্যের কোঠায় বলব না, শুনতে খারাপ লাগে, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা তাই।”

সমাজে অবক্ষয় নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন এরশাদ।

“চারিদিকে শুধু হত্যা আর হত্যা, মৃত্যু আর মৃত্যু। সাম্প্রতিক ঐশীর ঘটনায় আমার মন অত্যন্ত খারাপ হয়ে আছে। দেশকে কী অবস্থায় রেখে গিয়েছিলাম, আর আজ কী অবস্থা!”

“এ সবই রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা। ঐশীকে কে সৃষ্টি করল? আমরা রাজনীতিবিদরা। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। ঐশী খুনি নয়, আমরা খুনি।”

গুলশানে ওই অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর আহমেদ নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।

“পত্র-পত্রিকায় যে সব বিভ্রান্তিকর প্রচার হচ্ছে, তাতে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। যেহেতু আমরা ফ্যাক্টর হয়ে উঠছি, নানা আলোচনা হবেই। রাজনৈতিক মতের ক্ষেত্রে মতদ্বৈততা থাকতে পারে, কিন্তু নেতৃত্বের প্রশ্নে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।”

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।