জিএসপি সুবিধা বাতিলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো ধরনের অনুরোধ করেননি বলে দাবি করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া।
Published : 29 Jun 2013, 10:08 AM
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা স্থগিতের পর সরকারি দলের নেতাদের সমালোচনার জবাবে শনিবার সংসদে তিনি বলেন, “বলা হয়েছে, আমি নাকি চিঠি দিয়ে এই সুবিধা বন্ধ করেছি। কিন্তু আমি কোনো চিঠি পাঠাইনি।”
বিরোধীদলীয় নেতার এই বক্তব্যের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাতে থাকা ওয়াশিংটন টাইমসে খালেদা জিয়ার নামে ছাপানো একটি নিবন্ধের অনুলিপি তুলে ধরেন।
তা দেখে খালেদা জিয়া বলেন, “এটা আমার নয়। এমন কোনো লেখা আমি পাঠাইনি।”
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারগুলো বাস্তবায়ন না করায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমসে খালেদা জিয়ার নামে ছাপানো ওই নিবন্ধ ধরে জিএসপি সুবিধা স্থগিতের জন্য তাকে দায়ী করে শুক্রবার বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
ওই নিবন্ধে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ‘রক্ষায়’ যুক্তরাষ্ট্রের ‘হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাশার পাশাপাশি বলা হয়েছিল, শ্রমিক ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের পক্ষে যারা কথা বলেন, তাদের ওপর দমন-পীড়ন হওয়ায় জিএসপি সুবিধা বাতিলের হুমকি শেখ হাসিনা সরকারকে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাশা নিয়ে ওই সময় সরকারি দলের নেতারা সমালোচনামুখর হলে বিএনপির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়া হস্তক্ষেপ চাননি, দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন তিনি।
খালেদা জিয়া সংসদে বলেন, “এটা আমার চিঠি নয়। আমি প্রমাণ দেখাতে পারি- কেউ কেউ বলে- আমার নামে একটি লেখা বিদেশি পত্রিকায় প্রচারিত হয়েছে।। আমি এমন কোনো লেখা পাঠাইনি।”
জিএসপি সুবিধা স্থগিতে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগও নাকচ করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
তিনি জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
সংসদে অশালীন ভাষা ব্যবহারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জাতীয় সংসদে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার হচ্ছে, তাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের কাছে শিখছে, তা আমাদের তলিয়ে দেখা দরকার।”
অশালীন ভাষা ব্যবহারের জন্য সরকারি দলকেই দায়ী করেন তিনি।
বিরোধী দলকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, “নবম জাতীয় সংসদের শুরতে সংসদ নেতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিরোধী দলকে সংখ্যা দিয়ে বিচার করবেন না, ডেপুটি স্পিকার হবে বিরোধী দল থেকে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি।
“বিরোধী দলের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে গত চার বছরে, তা কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।”
আওয়ামী লীগ আজও ভিন্ন মত মেনে নিতে পারে না। বিরোধী দল সহ্য করতে পারে না।
গত ৩ জুন বাজেট অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে যোগ দেন।
এর আগে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া সংসদের বাইরে জানালেও এবার সংসদেই তা করছে বিরোধী দল।