ঢাকা, অগাস্ট ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে সমালোচনার মুখে থাকা মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
পদত্যাগপত্র দেওয়ার এক মাস পর বৃহস্পতিবার তা অনুমোদন করা হয়। তার পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের পর তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করেছেন বলে বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব শফিউল আলম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মধ্যে গত ডিসেম্বরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় আবুল হোসেনকে। তবে এই মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।
আবুল হোসেন পদত্যাগ করায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এখন কোনো মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নেই।
এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কে পালন করবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কাউকে দায়িত্ব দেওয়া সংক্রান্ত কোনো আদেশ এখনো আসেনি। তবে নিয়ম অনুযায়ী কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কেউ না থাকলে তা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ১০ মাসের টানাপোড়েন শেষে গত ২৩ জুলাই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন আবুল হোসেন। তখন তিনি তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
পদ্মা প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত চলাকালে দায়িত্বপূর্ণ পদে না থাকার ইচ্ছা থেকেই তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বলে সরকারি সূত্র জানায়।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে তাতে স্থান হয় আবুল হোসেনের। মাদারীপুরের এই সংসদ সদস্য শেখ হাসিনার গত সরকারে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
গত সেপ্টেম্বর পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক অভিযোগ তোলার পর থেকে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে আসছেন তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগের মধ্যেই ডিসেম্বরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আবুল হোসেনকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে দাবি করে গত ২৯ জুন বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা প্রকল্পে তাদের ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে।
এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পক্ষে সংস্থাটির যুক্তি ছিল, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দায়িত্বপূর্ণ স্থানে অধিষ্ঠিতদের মধ্যে যাদের নাম এসেছে, তদন্তের পুরো সময় ছুটিতে পাঠাতে বলা হলেও সরকার তা মানেনি।
বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ৬ কিলোমিটার এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করার ঘোষণা দিলেও বিশ্ব ব্যাংককে ফেরানোর চেষ্টাও করছে।
বিশ্ব ব্যাংকের সব শর্তই এখন পূরণ হয়েছে বলে তাদের ফেরার আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/এমআই/১৭২৭ ঘ.