সরকার ‘পরিকল্পিতভাবে’ বিভাজন সৃষ্টি করছে: ফখরুল

পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের পাশাপাশি ‘অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে’ বিভাজন সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2021, 02:36 PM
Updated : 19 Oct 2021, 02:36 PM

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শান্তি মিছিলের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “এই আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে বিভাজন সৃষ্টি করছে। এবং বিভাজন সৃষ্টি করে তারা এটাকে পুঁজি করে, সেটাকে আবার তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে একজন বলেছেন, আজকে তারা (আওয়ামী লীগ) শান্তি মিছিল বের করেছে।

“অশান্তি ঘটালেন আপনারা, আগুন দিলেন আপনারা, মারলেন আপনারা, গুলি করলেন আপনারা এবং নিরীহ মানুষদের হত্যা করলেন, আজকে শান্তি মিছিল বের করছেন। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না। এই আওয়ামী লীগ এটাই। এটাই আওয়ামী লীগের খাঁটি চরিত্র। এটাই তারা করে এসেছে জন্মের পর থেকে।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এদেশের মানুষ অনেক বেশি কষ্ট পাবে। আমাদের অর্জনগুলো সমস্ত হারিয়ে যাবে। আমরা আরও বেশি নিচের দিকে নামতে থাকব। তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সকল সচেতন মানুষ যারা আছি, তারা এই দানবীয় সরকারকে সরাতে হবে।”

এবারের পূজামণ্ডপে মানুষজন কম উপস্থিতি হয়েছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে দেখুন এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা-সংকট সরকার তৈরি করেছে। এখানে দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) আছেন। দাদার বাড়িতে পূজা হয়েছে, সেই বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম। এর আগের বছর যখন গেছি, তখন দেখেছি কী উৎসব, কী আনন্দ। সেখানে কাছাকাছি আরও কয়েকটা পূজামণ্ডপে পূজা হচ্ছে লোকজন রাস্তায় বোঝাই হয়েছিল।”

“এবার গিয়ে দেখলাম দাদার বাড়িতে ওইভাবে লোক নেই। কারণ মানুষ ভয় পেয়ে গেছে, যেভাবে লোক আসছে না। পূজা সেভাবে হচ্ছে না। এবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেছি, সেখানেও আমি দেখেছি- অনেক কম মানুষ, বনানীতে পূজামণ্ডপে গেছি সেখানেও অনেক কম মানুষ। কেন? আমাদের অন্যতম ভাই, আমাদের পাড়া-প্রতিবেশি, আমাদের দেশের স্বাধীন নাগরিক তারা কেন তাদের ধর্মের উৎসব পালন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিভাবে বিভাজন সৃষ্টি করছে।“

আওয়ামী লীগ কখনও গণতন্ত্র ফেরত দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা বোঝার কোনো কারণ নেই যে, তারা আমাদেরকে গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্র তারা নিজের হাতে শেষ করেছে ১৯৭৫ সালে এবং এবার ২০০৮ সাল থেকে শুরু করেছে।’’

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা এবং পরে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে তার নানা যুগান্তকারী পদক্ষেপ তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে তার জীবনাদর্শ ও দর্শন অনুসরণের আহবান জানান মির্জা ফখরুল।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, পেশাজীবী নেতা গাজী আব্দুল হক, প্রকৌশলী মিয়া মুহাম্মদ কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডা. পারভেজ রেজা কাঁকন, অধ্যাপক আবদুল করীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের রকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানসহ পেশাজীবী নেতারা।

আরও পড়ুন