ভয় নেই, পাশে আছি: সম্প্রীতি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2021, 08:11 AM
Updated : 19 Oct 2021, 11:05 AM

তিনি বলেছেন,“শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এর প্রতিরোধ করব। হিন্দু ভাইদের বলব, আপনাদের ভয় নাই, শেখ হাসিনা আপনাদের সাথে আছে, আওয়ামী লীগ আপনাদের সাথে আছে।”

দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা’ থেকে ওবায়দুল কাদেরের এই প্রতিশ্রুতি আসে। 

ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি শুরু হয় বেলা সোয়া ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে।

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলোও সারাদেশে এ কর্মসূচি পালন করে।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর-এগুলো ২০০১ সালে বিএনপি সরকার যে নির্যাতন চালিয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি। আবার নতুন করে সাম্প্রদায়িক হামলা-সন্ত্রাস শুরু করেছে।

“শেখ হাসিনার আমলে প্রত্যেকটি দুর্গাপূজায় হাজার হাজার পূজামণ্ডপে পূজা চলেছে। কোনো ঘটনা ঘটেনি। হঠাৎ আগামী নির্বাচন সামনে রেখে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা শুরু হয়েছে।"

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়।

এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আওয়ামী লীগ রাজপথ ছাড়ে নাই। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা বাংলাদেশে আজ সম্প্রীতি সমাবেশ হচ্ছে, শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে। যতদিন না এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বিষদাঁত আমরা ভেঙে দিতে পারব, ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে রাস্তায় থাকবে।

“প্রতিবেশী দেশ ভারতে মুসলমান আছে, তাদের জানমালের কথাও আমাদেরকে ভাবতে হবে। হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, তাতে ভারতের একটা বড় অংশ মুসলমানদের জীবনকেও বিপন্ন করে ফেলছে।”

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মোকাবেলা করে তাদের ‘সমুচিত জবাব’ দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ‘প্রস্তুত আছে’ বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, বিএনপি আজ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।”

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “সাম্প্রদায়িক এই হামলায় যারাই জড়িত, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে সরকার খুব কঠোর হাতে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। অসাম্প্রদায়িক এই বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।”

বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে শুরু হয়ে জিরোপয়েন্ট, শিক্ষাভবন, দোয়েল চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় আওয়ামী লীগের শান্তি শোভাযাত্রা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, “তারা জানে যে ভোটের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করতে পারবে না। এজন্য এই ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।”

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “সম্প্রীতি নষ্ট করার লক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর উপাসনালয়ে হামলা চালিয়েছে। এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে। আওয়ামী লীগ এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সারাদেশে সতর্ক রয়েছে। এই অপশক্তিকে উৎখাত না করার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সংগ্রাম চলতে থাকবে।”

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেদ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, আব্দুল আওয়াল শামীমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন এ কর্মসূচিতে।