ওবায়দুল কাদেরের কথা‘চর্বিত-চর্বন’: রিজভী

জাতীয় নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন নিয়োগ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকে ‘চর্বিত-চর্বন’ বললেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2021, 08:10 AM
Updated : 8 Oct 2021, 08:10 AM

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বলেন, “আবারো সেই পুরনো কথা, সেই সার্চ কমিটির নির্বাচন কমিশন। আরে ভাই, আপনারাই তো অবৈধ। আপনারা পদত্যাগ করেন।”

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। নতুন নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে গত কিছুদিন ধরে।

সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করা আপাতত সম্ভব হবে না। ফলে আগের দুবারের মতই সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন কমিশনের সদস্যদের বেছে নেওয়া হবে।

তাতে আপত্তি জানিয়ে বিএনপি বলেছে এটা হবে জনগণের সঙ্গে ‘ধোঁকাবাজি’। বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে তার অধীনে নির্বাচনের দাবিও আবার সামনে আনছেন বিএনপি নেতারা, যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা নাকচ করে আসছে। 

রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একদিন আগে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। দেশে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেই কেবল নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এই লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি সবাইকে নিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই।”

“ওই একই কথা, একই চর্বিত-চর্বন তারা করছেন। মানে আজকে গণতন্ত্রকে একেবারে গোরস্থানের মধ্যে কবর দিয়ে তারা যে ডাকাতির মতো ক্ষমতা পরিচালনা করছেন- এটা ভুলে গেছেন। নির্বাচন-ভোট, গণতন্ত্রের যে অন্যতম শর্ত- এটাকে তারা একেবারে মুছে দিয়েছেন বাংলাদেশকে থেকে।”

অসুস্থতা কাটিয়ে সাড়ে ছয় মাস পর গত বুধবার বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে ফিরেছেন রিজভী। তারপর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবারই প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এলেন তিনি।

রিজভী বলেন, “বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই-নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামীতে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না, জনগণ হতে দেবে না। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে নেমে এ সরকারকে হটিয়ে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেই।”

দেশের অর্থনীতিকে সরকার ‘ফোকলা করে ফেলেছে’ অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “দুর্নীতি লুটপাটে দেশ ও জনগণকে পথে বসিয়ে দিয়েছে তারা। এই করোনা মহামারীতে মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে।

“এর মধ্যে ই-কমার্সের নামে ডজন ডজন প্রতিষ্ঠান, নানা নামে, নানা রঙে-ঢঙে কোন আইনের ভিত্তিতে জনগণের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করল?”

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “এই বক্তব্য যারা শুনেছেন তারা হতবাক হয়ে গেছেন। এটা কি কোন সভ্য দেশের মন্ত্রীর মুখের ভাষা হতে পারে?”

রিজভী বলেন, “ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়। এই দিন দিন নয়, আরো দিন আছে। সরকারকে বলব, এইসব গালাগালি মিথ্যাচার খিস্তি খেউর হুমকি ধমকি রেখে আগামী দিনের কথা চিন্তা করুন। আজ হোক আর কাল হোক জনগণের মুখোমুখি হতেই হবে।”

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের মুক্তির দাবি জানান রিজভী।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল করিম শাহিন, আমিনুল ইসলাম, মতস্যজীবী দলের আবদুস রহিম, ছাত্র দলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।