বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিয়ে যা বললেন ফখরুল

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগকে ক্ষমতাসীনদের ‘নতুন গীত’ আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2021, 11:14 AM
Updated : 2 August 2021, 11:14 AM

সোমবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি বলেন, “এদের (আওয়ামী লীগ সরকার) কাজ কী? এদের কাজ হচ্ছে সারাক্ষণ বিএনপিকে দোষারোপ করা, … জিয়াউর রহমান সাহেবকে কীভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা যায় তার চেষ্টা করা, কীভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে খাটো করা যায় তার চেষ্টা করা…।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সব সময় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ‘নিন্দা জানিয়েছেন’ দাবি করে ফখরুল বলেন, “আমরা কেউ কোনো হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, বিচার করেছেন আপনারা (আওয়ামী লীগ সরকার)…। সেই বিচার করার পরে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। অথচ আপনারা এখন শুরু করেছেন নতুন একটা গীতের গান, গীত গাওয়া, গান গাওয়া যে, জিয়াউর রহমান এটার সাথে সম্পৃক্ত ছিল।”

স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতার পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়া। তার হাতেই পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

জাতির পিতার খুনিদের রক্ষায় সে সময় ‘ইনডেমনটি’ অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন তখনকার ‘স্বঘোষিত’ রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমেদ। পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিয়ে সংবিধান সংশোধন করে খুনিদের রক্ষার পথটি স্থায়ী করার প্রয়াস চালান। হত্যাকারীদের নানা পদ দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর ইতিহাসে চিহ্নিত কালো ওই অধ্যাদেশ বাতিল করা হয়; জাতির পিতার খুনের বিচারের পথ খোলে।

বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার দশ দিনের মাথায় সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়া জিয়াও ওই হত্যাকাণ্ডে ‘পুরোপুরি’ জড়িত ছিলেন বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেজন্য জিয়ার ‘মরণোত্তর বিচারের’ দাবিও বিভিন্ন সময় তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুলের ভাষ্য: “কোথাও প্রমাণ করতে পারেনি, কেউ না। আজ পর্যন্ত কেউ এই কথা বলে নাই যে, জিয়াউর রহমান সাহেব সম্পৃক্ত ছিলেন। জিয়াউর রহমান সাহেব তো তখন ডেপুটি চিফ মার্শাল অ্যাডমিনিস্টারও ছিলেন না। তিনি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন মাত্র।”

‘আওয়ামী লীগের লোকজনই’ ওই ঘটনায় জড়িত ছিল মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “নিজেরা পরিষ্কার হোন, নিজেরা পরিচ্ছন্ন হোন, পরিশুদ্ধ হোন। হত্যার রাজনীতি বাদ দেন এবং সন্ত্রাসের রাজনীতি বাদ দেন, জনগণকে প্রতারণা করবার রাজনীতি বাদ দেন।”

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘সমস্ত অধিকার খর্ব করেছে’ অভিযোগ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “এই যে একটা ভয়াবহ অবস্থা, এ থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। একদিকে আমরা জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়াব, অন্যদিকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দানব সরকারকে সরানোর জন্য আমাদেরকে লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে।”

লালমনিরহাট বিএনপির উদ্যোগে জেলায় কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন এবং মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য বিতরণ উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়।

জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেকও বক্তব্য দেন।