হেফাজতের রাজনীতিতে সহায়তা দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা: মেনন

আওয়ামী লীগ হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদেরই জোটসঙ্গী দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2021, 03:32 PM
Updated : 2 June 2021, 03:32 PM

তিনি বলেছেন, “আজকে যে শাসকগোষ্ঠী রয়েছে, আমরা যাদের সাথে যুক্তও আছি। তারা হেয়াজতে ইসলামকে সহায়তা করছে। তাদের সাথে সমঝোতা করছে এবং তার ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তকের কারিকুলামে, সিলেবাসে পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

“তারা কওমী মাদ্রাসাকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের শিক্ষানীতিতে যেখানে একমুখী শিক্ষার কথা বলা হয়েছে, সেখানে বহুমুখী শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা এখন অন্যতম প্রধান শিক্ষায় পরিণত হয়ে গেছে।”

বুধবার ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’র ৫০ বছর ও উপমহাদেশ সাম্প্রদায়িক শক্তির পুনরুত্থান’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে একথা বলেন মেনন।

গত মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে দেশের বিভিন্নস্থানে হেফাজতের সহিংসতা চালিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে।

সে প্রসঙ্গ তুলে সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, “হেফাজতের বিক্ষোভ, অভ্যুত্থান চালানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে আমরা লক্ষ্য করি, বাংলাদেশকে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করা যায় কিনা, তার প্রস্তুতি তারা নিয়েছিল।”

নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের মধ্য দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মভীরুতার রাজনীতির উত্থান ঘটে বলে মন্তব্য করেন এই বাম নেতা।

তিনি বলেন, “আজকে বাংলাদেশ যখন একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচিত, তখনও আমরা লক্ষ্য করি সাম্প্রদায়িকতা কেবল পুনঃবিকাশমান নয়, এটি মানসিক স্তরে পৌঁছে গেছে।”

ভারতীয় উপমহাদেশেই সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটেছে উল্লেখ করে মেনন বলেন, “এটা কেবল বাংলাদেশের লড়াই না। এ লড়াই উপমহাদেশের লড়াই।

“এক দেশের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি জোরদার হওয়া, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলোকে আরও উৎসাহিত ও শক্তিশালী করে।”

এই আলোচনায় যোগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করতে দেশ, ধর্ম ও দলনিরপেক্ষভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিএম) পলিটব্যুরো সদস্য মহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে বড় সাম্প্রদায়িক বিপদকে যদি রুখতে হয়, তাহলে বামপন্থি প্রগতিশীল শক্তিকে, কমিউনিস্ট শক্তিকে একাট্টা করার চেষ্টা করতে হবে।”

মানুষের মনস্তত্ত্বে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাবের বিষয়ে বলতে গিয়ে লোকসভার সাবেক এই সদস্য বলেন, “সমাজের মধ্যে যে সমন্বয় ধারা আছে, তা রাজনীতির মধ্যেও নিয়ে আসতে হবে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন ভারতের সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাস ও তৎকালীন জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সদস্য শামসুল হুদা।