শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে সরকার ‘পানি ঘোলা করে খাচ্ছে’।
“আমরা দেড় বছর আগেই বলেছিলাম, একটা সোর্স থেকে যেন ভ্যাকসিন না নেওয়া হয়। তারা একটা সোর্স থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছে তাদের নিজেদের স্বার্থে। যার ফলে কি হয়েছে? ভ্যাকসিন নাই, ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না।
“আমরা বলেছিলাম যে, চীন-রাশিয়াসহ বিকল্প উৎসগুলো দেখা হোক। তারা সেটা করে নাই। যার ফলে কী হতে যাচ্ছে? আজকে চীনের সাথে চুক্তি করতে যাচ্ছে, রাশিয়ার সাথে চুক্তি করতে যাচ্ছে।”
ফখরুল বলেন, “একটা বিশেষ প্রাণী আছে, যারা ঘোলা করে পানি খায়। এদের অবস্থায় হয়েছে তা-ই। এরা ঘোলা করে পানি খাচ্ছে।”
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় সরকার গত নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আনার চুক্তি করার পর থেকেই বিএনপি বিভিন্ন সমালোচনা করে আসছে।
পরে দেশে গণ টিকাদান শুরু হলে বিএনপি নেতারাও ওই টিকা নিতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ তখন বিষয়টিকে ‘গাধার জল ঘোলা করে খাওয়ার’ সঙ্গে তুলানা করেছিলেন।
কিন্তু মহামারীতে সঙ্কটে থাকা ভারত এখন নিজেদের চাহিদা মেটাতে টিকা রপ্তানি বন্ধ রাখায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও চীনের তৈরি দুটি টিকা আমদানি ও ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে।
বর্তমান সরকারের শাসনামলে বিএনপির ‘পাঁচশর বেশি নেতা-কর্মী গুম হয়েছে’ বলেও বলে দাবি করেন ফখরুল। সেইসব নেতা-কর্মীদের পরিবারের মাঝে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ করতেই গুলশানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দুটি মানবাধিকার সংগঠনের তথ্যের বরাতে তিনি বলেন, “২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০১ জন গুম হয়েছে, দুই হাজার ৮১৭টি বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে এবং গুলি করে হত্যা হয়েছে অনেকগুলো।
“এত যে মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে, এত যে তরুণদের চলে যেতে হয়েছে, এর জবাব অবশ্যই এ সরকারকে দিতে হবে, আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। যারা গুম হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে, গোটা জাতির কাছে তাদেরকে জবাব দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে ‘নিখোঁজ’ ছাত্র দল নেতা নুরুজ্জামান জনি, জাকির হোসেন, তরিকুল ইসলাম তারা, মাহবুবুর রহমান বাপ্পী, তারিকুল ইসলাম ঝণ্টুর পরিবারের সদস্যদের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব। আরও ৮৭৭ জনের বাড়িতে ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আয়োজকরা জানান।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, স্বাধীনতার উদ্যানপনে মিডিয়া উপকমিটির সদস্য আতিকুর রহমান রুমন রুম্মন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, অনিন্দ্র্য ইসলাম অমিত, যুব দলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, কামরুজ্জামান দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ ছাত্র, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।