যুবলীগের পদে এলেন নিক্সন চৌধুরী

টানা দুই দফায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ফরিদপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন।

কাজী মোবারক হোসেন নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2020, 04:27 PM
Updated : 14 Nov 2020, 04:27 PM

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার যুবলীগের ২০১ সদস্যের যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন, সেখানে ২৭ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে ৮ নম্বরে আছেন নিক্সন চৌধুরী। 

ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনে এতদিন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নির্বাচন ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন নিক্সন চৌধুরী।

বঙ্গবন্ধুর এলাকা বৃহত্তর ফরিদপুরে বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান; ফরিদপুর-৪ আসন থেকেও বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই জিতে আসছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া আধিপত্যের মধ্যে জাফর উল্যাহ ২০০৮ সালে নির্বাচন করতে না পারায় তার স্ত্রী নিলুফার জাফর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপরই আবির্ভাব ঘটে মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের (নিক্সন চৌধুরী)। বঙ্গবন্ধুর বড় বোন ফাতেমা বেগমের নাতি তিনি। নিক্সনের বাবা ইলয়াস আহমেদ চৌধুরী মাদারীপুরের শিবচরের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার ভাই নূরে আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) এখন ওই আসনের এমপি, তিনি জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৪ সালের বিএনপিবিহীন নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিক্সন চৌধুরী। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।

এরমধ্যে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা কাজী জাফর উল্যাহকে বিষোদগার করে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন নিক্সন চৌধুরী।

সম্প্রতি ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নিক্সনের বিরুদ্ধে।

গত ১০ অক্টোবর ভোটের দিন সকালে তিনি চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে হুমকি-ধমকি দেন এবং অপর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার ওই টেলিফোন আলাপের অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।

এই ঘটনা ছাড়াও ওই নির্বাচন ঘিরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে ফোন করে ‘অশোভন আচরণ’ ও হুমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী।

এখন তাকে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করার বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সংগঠনটির সভাপতি ফজলে সামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা সাড়া দেননি।

তবে যুবলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগ সভাপতি পরশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে সামস পরশ আমাকে যুবলীগে অন্তর্ভুক্ত করায় আমি উনাদের ধন্যবাদ জানাই।

“আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। যুবলীগে অতীতের দুর্নাম মুছে সারা দেশের যুবলীগের ভাবমূর্তি ফেরানোর জন্য কাজ করে যাব।”