সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পরিণতি শুভ হবে না: নিতাই

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পরিণতি শুভ হবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2020, 09:28 AM
Updated : 8 Nov 2020, 09:28 AM

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার এক মানববন্ধনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এই উপদেষ্টা বলেন, “সোজা আঙ্গু্লে ঘি উঠবে না। আজকে এদেশে সংখ্যালঘুদের ওপরে যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়েছে, সেই বাহাত্তর সাল থেকে আজ পর্যন্ত যা তীব্রতর হয়েছে, সেই সংখ্যালঘুরা আজকে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠছেন।

“আজকে আপনারা জানেন, রানা দাশগুপ্ত-সিআর দাস-নিম ভৌমিকরা যে সংগঠন করে গিয়েছিলেন, রানা দাশগুপ্ত সেই সংগঠনের দায়িত্বে আছেন। তিনি কিন্তু একসময়ে এই আওয়ামী লীগের সাথে সহযোগিতা করতেন। আজকে তারাও ফুঁসে উঠেছেন, প্রতিবাদ করছেন। আজকে সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে তা পৃথিবী লক্ষ্য করছে, সারাদেশ লক্ষ্য করছে।”

নিতাই রায় বলেন, “আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, এর ফল শুভ হবে না। শেখ হাসিনাকে চরম মূল্য দিতে হবে। তোমার পুলিশ, তোমার প্রশাসন এবং তোমার কুক্ষিগত বিচার ব্যবস্থা তোমাকে রক্ষা করতে পারবে না।”

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়জ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “সারাদেশে ধর্মের দিক থেকে যারা সংখ্যায় কম তাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, নিরাপত্তা নেই। এর পাশাপাশি যদি দেখি ধর্মের দিক থেকে সারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাদের প্রতিও সরকার উদাসীন।

“এখানে সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নয়, সব একাকার হয়ে গেছে সরকারের কাছে। তারা ছাড়া, আওয়ামী লীগের দালাল ছাড়া আর কারও কোনো জীবনের নিরাপত্তা নেই।”

রামুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “রামুতে কি হয়েছিল? শেখ হাসিনার নির্দেশে সেখানে তাদের ভবন করে দেওয়া হয়েছে। কাঠের মন্দিরকে কংক্রিটের মন্দিরে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু রামুর সেই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত তিনি বলেছেন, ভবন সুন্দর হয়েছে বড় আরাম লাগছে কিন্তু মনের মধ্যে কোনো শান্তি নাই। কারণ যারা আগুন দিয়েছে সেই আসামিরা চোখের সামনে ঘোরাফেরা করছে।

“এই প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে রানা দাশগুপ্তের পাশে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেছেন, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়েদের সম্ভমহানি করা আওয়ামী লীগের সাংবিধানিক অধিকারে পরিণত হয়েছে। এগুলো তাদের কথা, আমাদের কথা নয়।”

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “গত ৭ মাসে ২৭টি প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরে হামলা করা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের মা-বোনরা প্রতিনিয়ত ধর্ষিতা হচ্ছেন, তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে বর্তমান সরকারকে হটাতে হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদ নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগসহ সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের প্রতিবাদে  সামনে ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ছাত্র-যুব ফ্রন্ট’ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।

ফ্রন্টের ঢাকা মহানগর সভাপতি সঞ্জয় গুপ্তের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপির অমলেন্দু দাস অপু, জয়দেব জয়,সুশীল বড়ুয়া, আকাশ ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।