বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “ভারত নজর দিয়েছে কী করে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত করা যায়। তারা ষড়যন্ত্র করছে। সেজন্য তারা সকল আন্তর্জাতিক নিয়মাবলী অস্বীকার করে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
“এভাবে চলতে পারে না। ভারতকে একটা ফাইনাল ওয়ার্নিং দেওয়া দরকার। আমাদের এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। চলুন আমরা সবাই একত্রিত হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।”
বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ বলেন, “ভারতকে পরিষ্কারভাবে আমাদের বলা দরকার, ট্রানজিট হবে না, ইয়ে হবে…। তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ট্রানজিট বন্ধ করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “তারা (ভারত) মিডিয়া বন্ধ করেছে। খালেদা জিয়াকে গুলশানে আর হাসিনাকে আমলা ও ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) অনুসারী দ্বারা পরিবেষ্টিত করে বন্দি করে রেখেছে। এভাবে চলতে পারে না।
“এর বিরুদ্ধে ভারতকে সমুচিত জবাব দিতে হবে।”
আড়াই মিনিট বক্তব্যের পরপরই গরমে ডা. জাফরুল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়লে ফুটপাতে বসে পড়েন। পরে নিজের প্রাইভেটকারে করে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “দেশে সমস্ত জিনিসের দাম বেড়েছে। দেশে কোনো বিনিয়োগ নাই, দেশে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা নাই, কোনো স্কুল খুলে না, কলেজ খুলে না, বিনা পরীক্ষায় পাস। দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী? সরকারের কাছে টাকা নাই। সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কিছু টাকা দাও। সবাই বলছে থুক্কু। রিজার্ভ থেকে কি টাকা দেয়া যায়, কেউ দেয় না কখনও। আপনি নিলে খুব বদনাম হবে। এখন কোনো কথা বলছেন না। কী করবে? তাদের কাছে টাকাই তো নাই।
“একটা দেশ বছরে যদি এক লক্ষ টাকা বিদেশে পাচার করে, ওই টাকা ধরতে যায় না। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি মাত্র দুই বছরে দুই হাজার কোটি টাকা কামাই করেছে- বিশ্বাস করেন। চোর ওরা, ডাকাত, লুটেরা, দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঠাচ্ছে। এই সরকার শুধু ক্ষমতার সাথে আর জনগণের বিপক্ষে।”
“যে দাবি, এই সরকারকে সরানো ছাড়া আপনি কিছু করতে পারবেন না। সেই কর্মসূচি নিয়ে আমরা সবাইকে সংগঠিত করে রাজপথে নামি। প্রস্তুত হোন, সংঘবদ্ধ হোন, আমাদের বিজয় হবেই। এই সরকারকে একটাই কথা- তুমি চলে যাও, তুমি পারছ না দেশ চালাতে।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “এই সরকার বলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের রক্তের সস্পর্ক। অথচ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রায়ই মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের সীমান্তে এভাবে মানুষ হত্যা হয় না।
“আজকে থেকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয়েছে। গতকালকেও সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতিই এজন্য দায়ী।”
“আমরা বলব, অবিলম্বে পেঁয়াজসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর ব্যবস্থা করেন। নইলে আপনাদের মেয়াদ কমানোর ব্যবস্থা হবে। যদি দ্রব্যমূ্ল্য না কমান, মানুষের জীবনের দুর্ভোগ না কমান আপনাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার মেয়াদ আমরা কমিয়ে দেব।”
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারষ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির শিরিন সুলতানা, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, গণফোরামের মোশতাক আহমেদ, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের নেতারা বক্তব্য রাখেন।