যুবলীগসহ আ. লীগের চার সংগঠনের সম্মেলন নভেম্বরে

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের চারটি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2019, 03:42 PM
Updated : 9 Oct 2019, 04:09 PM

সবগুলো সংগঠনের সম্মেলনই হবে নভেম্বরে, যা শুরু হবে ২ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। এরপর ৯ নভেম্বর শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সম্মেলন হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বুধবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেন। প্রতিটি সংগঠনের নেতাদের চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এগুলোর মধ্যে কৃষক লীগের সম্মেলন পিছিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে পরের দিন ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যা দিবস থাকায় কৃষক লীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।”

গত মাসে আওয়ামী লীগের এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ নভেম্বর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি নগদ টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি ইয়ংমেনস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

পাশের ওয়ান্ডারার্স থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার হয়, এই ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে থাকা মোল্লা  মো. আবু কাওসার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। এরপর ধানমণ্ডির কলাবাগান ক্রীড়া চক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব, অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সফিকুল আলম ফিরোজকে।

এরমধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে।

এই অভিযান চলার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে গত ২ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

পরদিন আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে চিঠি দেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানকে ‘শুদ্ধি অভিযান’ নাম দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, সন্ত্রাস, চাঁদবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকেও অপরাধী মুক্ত করা হবে। 

সম্মেলনের দিন ঠিক হওয়া নিয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২৩ নভেম্বর আমাদের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। তবে এখনও কোনো চিঠি পাইনি।”

তিন বছর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ সালের ১৪ জুলাইয়ের কাউন্সিলে যুবলীগের চেয়ারম্যান হন ওমর ফারুক চৌধুরী। ওই কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হন হারুন অর রশিদ।

ওই বছর ১১ জুলাই মোল্লা কাওসারকে সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হয়। অনেক আগে মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ওই কমিটিই এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

একই অবস্থা সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের। সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম নেতৃত্বাধীন শ্রমিক লীগের বর্তমান কমিটিও মেয়াদ পেরিয়েছে প্রায় তিন বছর আগে।